• নগ্ন দেহ, ‘খুনি’ যুগলের ‘এসকেপ প্ল্যান’! কসবার হোটেল কাণ্ড হার মানায় চিত্রনাট্যকেও
    প্রতিদিন | ২৪ নভেম্বর ২০২৫
  • অর্ণব আইচ: হোটেলের ঘরে পড়ে আদর্শ লোসালকার নিথর দেহ। তাঁর শরীরে সুতোটুকু নেই। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে মদের ফাঁকা বোতল, গ্লাস। ওই ঘরে প্রায় আড়াই ঘণ্টা সময় কাটায় ধ্রুব ও কোমল। সূত্রের খবর, দেহ ফেলে রেখে কোথায় যাবে, জানাজানি হওয়ার পর কী বলবে ? সেসব ব্লুপ্রিন্ট ওই হোটেলের ঘরে বসেই ছকে নেয় তারা। তারপরই দেহ ফেলে রেখে হোটেল কর্তৃপক্ষকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে বেরিয়ে পড়ে দু’জনে। শেষমেশ কিছুটা আতঙ্কে আইনজীবীর পরামর্শে আত্মসমর্পণ করে ধ্রুব ও কোমল।

    সিসিটিভি ফুটেজ-সহ আরও নানা সূত্র বলছে, কসবার হোটেলে আদর্শ লোসালকা খুন হন গত ২১ এপ্রিল, রাত বারোটা নাগাদ। সিসিটিভি ফুটেজ অনুযায়ী, রাত আড়াইটে নাগাদ হোটেল থেকে বেরয় কোমল ও ধ্রুব। সুতরাং খুনের পর প্রায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা একসঙ্গে ছিল তারা। দেহের পাশে বসে নানা পরিকল্পনার পর হোটেল থেকে বেরয়। অ্যাপ বাইকে করে তারা উল্টোডাঙা পৌঁছয়। রেলপথে যায় বারাকপুরে। সেখানেই বাড়ি কোমলের। নিজেদের বাড়িতে বেশিক্ষণ থিতু হয়নি তারা। বারাকপুরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে নদিয়ার কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের কাছে একটি বাড়িতে যায় কোমল ও ধ্রুব। সেখানে মাঝে মাঝে থাকত দু’জনে। হোটেলে রাত কাটানোর সময় টিভি চালায়। সংবাদমাধ্যমে কসবার হোটেলে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট আদর্শের খুন নিয়ে নানা খবর দেখতে পান। তাতেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। ফোনে পরিচিত এক আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে। এরপরই আত্মসমর্পণ করে তারা। কী কারণে খুন করা হল আদর্শকে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

    বলে রাখা ভালো, ডেটিং অ্যাপে ছবি দেখে কোমলকে বেশ পছন্দ হয়েছিল আদর্শ লোসালকার। এরপর মোবাইল নম্বর বিনিময়। কয়েকদিন ধরে দু’জনের মধ্যে চলে চ্যাট। আর তার পরই একটি হোটেলে ডেটিং বান্ধবীটিকে কাছে পেতে চান পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট আদর্শ। রাজি হয় বান্ধবীটি। আদর্শ লোসালকার সঙ্গে দক্ষিণ কলকাতার কসবার রাজডাঙার একটি হোটেলে গিয়েছিল যুগল। ভাড়া নেওয়া হয়েছিল হোটেলের দু’টি ঘর। গভীর রাতে সঙ্গিনী ও সঙ্গিনীটির সঙ্গে আসা ব্যক্তির সঙ্গে তাদের চাহিদামতো টাকার লেনদেন নিয়ে গোলমাল হয় আদর্শের। সম্ভবত তার জেরে হোটেলের ঘরে আদর্শকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বলে ধারণা পুলিশের। কোমল সাহা নিজেকে পেশায় ‘কনটেন্ট রাইটার’ বলে দাবি করে। যুবতীর সঙ্গী ধ্রুব মিত্র সামগ্রী সরবরাহের কাজ করে। ধ্রুব নদিয়ার রানাঘাটের কুপার্স ক্যাম্প ও কোমল উত্তর ২৪ পরগনার বারাকপুরের মোহনপুর এলাকার বাসিন্দা। যদিও দমদমের পূর্ব সিঁথির একটি বাড়িতে দু’জন ‘লিভ ইন’ করত বলেই খবর। দু’জনকে জেরা করে খুন সম্পর্কে আরও নানা তথ্য পাওয়া যাবে বলেই আশা তদন্তকারীদের।
  • Link to this news (প্রতিদিন)