মৃত্যুর ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে গ্রেফতার ব্যবসায়ী দম্পতি
আনন্দবাজার | ২৪ নভেম্বর ২০২৫
একটি সিভিল মামলায় আদালতে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ভুয়ো শংসাপত্র জমা দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক দম্পতির বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ। ধৃত স্বামীর নাম জর্জ ক্লেটন ডিকসন এবং স্ত্রীর নাম ক্যারল এরিকসন ডিকসন। রবিবার দুই ধৃতকে ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে কলকাতার মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারকের (সিজেএম) আদালত।
আদালত সূত্রের খবর, শেক্সপিয়র সরণি থানা এলাকায় একটি রেস্তরাঁ চালান এই দম্পতি। এই রেস্তরাঁর আসল মালিক একটি চ্যারিটেবলট্রাস্ট। তারা দোকানঘরটি ভাড়া দিয়েছিল নিত্যরঞ্জন ঘোষ নামে এক ব্যক্তিকে। নিত্যরঞ্জনের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে ব্যবসা চালাতে থাকেন ডিকসন দম্পতি। ট্রাস্টের মালিকানাধীন সম্পত্তি হিসেবে এই রেস্তরাঁ-সহ বহু দোকানঘর ভাড়া দেওয়া ছিল। ২০১৪ সালে ট্রাস্ট সিভিল কোর্টে ওই ভাড়াটেদের উচ্ছেদের মামলা করে। ২০১৭ সালে সিভিল কোর্ট উচ্ছেদের রায় দেয়। অভিযোগ সেই উচ্ছেদের মামলায় ডিকসন দম্পতি আদালতে নিত্যরঞ্জনের মৃত্যুর ভুয়ো শংসাপত্র জমা দেন সম্পত্তি নিজেদের দখলে রাখার জন্য। সেই শংসাপত্রকে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় ট্রাস্ট। হাই কোর্টেও প্রমাণিত হয় ওই শংসাপত্রটি ভুয়ো।
প্রসঙ্গত, গোসাবার পাঠানখালি গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে কয়েক হাজার জন্ম এবং মৃত্যুর ভুয়ো শংসাপত্র ইসু করা হয়েছিল বলে অভিযোগ। তার মধ্যেই ছিল নিত্যরঞ্জনের মৃত্যুর শংসাপত্র। গোসাবা থানার এই মামলায় ১০ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিটও পেশ করা হয়েছে।
আদালতে নিত্যরঞ্জনের মৃত্যুর ভুয়ো শংসাপত্র পেশের অভিযোগে শনিবার ওই রেস্তরাঁ থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে ডিকসন দম্পতিকে। রবিবার দু’জনকে সিজেএম কোর্টে হাজির করা হলে তাঁদের আইনজীবী ইন্দ্রদীপ দাস, শুভার্থী সরকার বলেন, ‘‘জন্ম-মৃত্যু সংক্রান্ত একটি সরকারি পোর্টালে নিত্যরঞ্জনের ওই মৃত্যুর শংসাপত্র প্রকাশ করা হয়েছিল। ডিকসন দম্পতি সেখান থেকে নিয়ে তা আদালতে পেশ করেন। শংসাপত্রটি যে ভুয়ো, সেটি তাঁরা জানতেন না।’’ স্বামী-স্ত্রীকে জামিন দেওয়ার অর্জি জানান তাঁরা। মামলার সরকারি আইনজীবী রাধানাথ রং ধৃতদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর আর্জি জানিয়ে বলেন, ‘‘এটি একটি গভীর ষড়যন্ত্র। ধৃতেরা এই ষড়যন্ত্রের অংশীদার।’’ দু’পক্ষের সওয়াল-জবাবের পরে বিচারক ডিকসন দম্পতির জামিনের আর্জি খারিজ করে দেন।