‘যোগ্যতা অর্জনের পরও কেন বঞ্চিত হব!’ফের পথে নামার ডাক এসএসসি-র নতুন চাকরিপ্রার্থীদের
আনন্দবাজার | ২৪ নভেম্বর ২০২৫
ফের বিকাশ ভবন অভিযানের ডাক ২০২৫ এসএলএসটি-র নতুন চাকরিপ্রার্থীদের। আগামী ২৪ নভেম্বর, সোমবার করুণাময়ী থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছেন তাঁরা।
নতুনদের অভিযোগ, যথেষ্ট যোগ্যতা ও মেধা থাকা সত্ত্বেও অভিজ্ঞতার কাছে হেরে গিয়েছেন। এটি আদতে সরকারি বঞ্চনা বলেই মনে করছেন তাঁরা। তাই অভিজ্ঞতার জন্য দেওয়া অতিরিক্ত ১০ নম্বর বাতিলের দাবিতে রাজপথে তা নামতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।
নতুন পরীক্ষার্থীদের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় কেউ পূর্ণমান ৬০-এর মধ্যে পেয়েছেন ৬০। কেউ পেয়েছেন ৫৯। অথচ, ১০০ শতাংশ নম্বর পাওয়ার পরেও ডাক পাননি ইন্টারভিউয়ে।
ইতিমধ্যে নতুন চাকরিপ্রার্থীদের তরফে হাই কোর্টে মামলা করা হয়েছে। বিকাশ ভবনের ধর্নামঞ্চ করে আন্দোলনের জন্য অনুমতিও চাওয়া হয়েছে। এর আগে দু’দিন নতুন চাকরিপ্রার্থীরা বিক্ষোভ দেখালে, পুলিশ তাঁদের তুলে দেয় অনুমতি না থাকায়। তাই এ বার, বিধাননগর কমিশনারেট ও বিধাননগর উত্তর থানায় মিছিল করার জন্য অনুমতি চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন একাংশ প্রার্থী। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও অনুমোদন দেয়নি পুলিশ।
ইন্টারভিউতে ডাক পাননি শিশিরকুমার দাস। তিনি বলেন, “আমরা ইতিমধ্যেই আইনের দ্বারস্থ হয়েছি। কিন্তু কবে আদালত অনুমোদন দেবে তার জন্য তো আমরা বসে থাকতে পারি না। একবার নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়ে গেলে আমরা বঞ্চিত হব। আমাদের ন্যায্য দাবি আমরা আন্দোলনের মাধ্যমেই ছিনিয়ে নেব।”
নতুন চাকরিহারাদের মূলত তিনটে দাবি রয়েছে— এক, অভিজ্ঞতার জন্য দশ নম্বর কোনও ভাবেই কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দেওয়া যাবে না। দুই, অবিলম্বে অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করতে হবে। তাঁদের দাবি, প্রায় ১৩ হাজার শূন্যপদ বৃদ্ধি করতে হবে। তিন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে সমস্ত প্রার্থীর ওএমআর শিট প্রকাশ্যে আনতে হবে।
নতুন পরীক্ষার্থী সায়রাবানু আহমেদ বলেন, “দশ বছর বাদে পরীক্ষা নিয়েছে কমিশন। আর তার পরও নতুনদের সঙ্গে বঞ্চনা করা হচ্ছে। এই দশ নম্বর আসলে এক কালো পর্দা। যা সরকার তার দুর্নীতিকে ঢাকতে ‘যোগ্য’দের সুবিধা করে দিচ্ছে।”
নতুন চাকরিপ্রার্থী সাইফুল হাসান বলেন, “সংবিধানের মৌলিক অধিকারের অনুচ্ছেদ ১৬ নম্বর ধারা অনুসারে সকলকে সমান অধিকার দেওয়ার কথা বলা আছে। আর সরকার এখানে ‘যোগ্য’দের সুবিধা করিয়ে দেওয়ার জন্য নতুনদের অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে।”
এর আগে ১৭ নভেম্বর করুণাময়ী থেকে বিকাশ ভবন অভিযান করেন নতুন চাকরিপ্রার্থীরা। সেন্ট্রাল পার্কের সামনে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন প্রায় সাত ঘণ্টা। অনুমতি না থাকায় পুলিশ সেখান থেকে সরিয়ে দেয় তাঁদের। ১৮ নভেম্বর ফের সার্ভিস কমিশনের অভিযানের জন্য করুণাময়ীতে জমায়েত হলে পুলিশ তাঁদের আটক করে। এই পরিস্থিতিতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। যদিও হাতে সময় কম বলেই রাস্তায় নেমে বিক্ষোভের পথ থেকেও সরছেন না।