পুনর্বাসন, পুকুর খনন ও বকেয়া চাকরি মেটানো সহ জমি অধিগ্রহণ করে চাকরির প্রতিশ্রুতি আদায়ের দাবিতে ইসিএলের পৃথক দু’টি খনি এলাকায় কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখানো হল। স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হচ্ছে বলে কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ জানান।
শুক্রবার সকালে জামুড়িয়ার নিউ কেন্দা তিন নম্বর খোলামুখ খনিরকাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন লাগোয়া ক্ষ্যাপাডাঙার বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, এলাকায় প্রায় ৫০টি বাড়ি আছে। খনি সম্প্রসারিত হয়ে লোকালয়ের কাছে চলে এসেছে। এর জেরে একমাত্র পুকুরের জলস্তর কমতে শুরু করেছে। তাতে জলেরত সমস্যা তীব্রতর হচ্ছে। খনি কর্তৃপক্ষকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে খনি চালাতে হবে। তার আগে নতুন একটি পুকুর খনন করে দিতে হবে। তা ছাড়া এখানে বসবাস করা যাবে না।
অন্য দিকে, অন্ডাল কৃষিজমি জীবন জীবিকা রক্ষা সমিতির নেতৃত্বে অন্ডালের মধুজোড় কোলিয়ারি এলাকায় একটি বেসরকারি সংস্থার জমি অধিগ্রহণ না করে কার্যালয় চালুর বিরোধিতা করে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হল। সংগঠনের সভাপতি উজ্জ্বল পাল এবং সম্পাদক তপন মুখোপাধ্যায় জানান, মধুজোড় কোলিয়ারির ভূগর্ভে পর্যাপ্ত কয়লা থাকা সত্ত্বেও বেসরকারি হাতে সরাসরি তুলে দেওয়া হয়েছে। ১৯৯১ সালের আগে মধুজোড় কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষ ৩২ জন জমি মালিকের কাছ থেকে এক একর করে জমি অধিগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৯১ সালের আগে সংস্থার নিজস্ব আইন অনুযায়ী এক একরের বিনিময়ে একজনকে চাকরি দেওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু, ১৯৯১ সালে দু’একরের বিনিময়ে একজনকে চাকরিতে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর ওই ৩২টি পরিবারকে চাকরি দেওয়া হয়নি। বেসরকারি সংস্থা এখানে খনি চালু করার আগে ওই ৩২টি পরিবারের একজন করে চাকরিতে নিয়োগ করতে হবে। খনি সম্প্রসারণ করতে জমির প্রয়োজন। খনির পাশে ব্যক্তিগত চারশো বিঘের বেশি জমি আছে। খনির কাজ শুরু করার আগে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। দু’একরের বিনিময়ে জমিদাতা পরিবারের একজনকে চাকরি দিতে হবে। তা ছাড়া তাঁরা কাজ করতে দেবেন না।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জমি মালিকদের ন্যায্য দাবি আদায় করতেই এই সংগঠন কাজ করছে। তাঁদের অভিযোগ, জমি অধিগ্রহণের আগেই ইসিএল-এর দুটি পরিত্যক্ত আবাসন সংস্কার করে কার্যালয় চালু করতে চাইছেন বেসরকারি সংস্থা কর্তৃপক্ষ। কয়েক দিন ধরে সংস্কার চলছে। এ দিনতাঁরা কাজ বন্ধ করে দেন। দাবি পূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দেন। ইসিএল কর্তৃপক্ষ জানান, স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।