• ধাপায় ১৫ তলা উঁচু বর্জ্যের পাহাড়, নতুন পেলোডারের পরিকল্পনা কলকাতা পুরসভার
    আনন্দবাজার | ২৪ নভেম্বর ২০২৫
  • ধাপার বর্জ্যের পাহাড় যেন ক্রমে চেপে বসছে। প্রায় ১৫ তলার সমান উচ্চতায় জমে থাকা সেই আবর্জনার স্তূপের উপরে প্রতিদিনই জমা হচ্ছে নতুন আবর্জনার স্তর। প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার মেট্রিক টনের বেশি বর্জ্য এসে মেশে ওই পাহাড়ে। শহরের ক্রমাগত বর্জ্য-স্রোত সামলাতে গিয়ে একাধিক বার ধাপার ভিতরের রাস্তা ভাঙার পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছে। বৃষ্টিতে কাদা জমে গাড়ির চাকা থমকে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তিন বছরের চুক্তিতে একটি পেলোডার ভাড়ায় নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে কলকাতা পুরসভা।

    পুরসভা সূত্রের খবর, বর্তমানে এক বছরের চুক্তিতে একটি পেলোডার কাজ করছে। কিন্তু আগামী ৩০ নভেম্বরেই সেই চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। এ দিকে, এক দিনও পেলোডার বন্ধ রাখার উপায় নেই। কারণ, পেলোডার দিয়েই সেখানে আবর্জনা ওঠানো-নামানো ও সরানোর কাজ চলে। সেক্ষেত্রে ধাপায় বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এই কারণে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে যাতে কাজ চলে, তাই এই প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। প্রাথমিক অনুমান অনুযায়ী, ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১ কোটি টাকা।

    সরকারি নথি অনুযায়ী, ধাপার ‘ল্যান্ডফিল সাইট’-এর উচ্চতা ইতিমধ্যেই প্রায় ১৫০ ফুট, যা সাধারণ ধারণায় প্রায় ১৫ তলার সমান। এত উঁচু আবর্জনার স্তূপে প্রতিদিন গাড়ি ওঠা-নামা করানো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। রাস্তাগুলি নিয়মিত ভেঙে যাচ্ছে। আবার তা মেরামত হচ্ছে। আবার ভাঙছে। পরিস্থিতি সামলাতে গিয়ে বিপর্যয়ের সময় সাময়িক জল বেরোনোর ব্যবস্থাও করতে হচ্ছে।

    তবে এই প্রস্তাব ঘিরে স্বভাবতই একাধিক প্রশ্ন উঠছে। গত এক বছরের পেলোডার পরিষেবার মূল্যায়ন কোথায়, আনুমানিক খরচেজিএসটি ও সেস বাদ দেওয়া হল কেন, ধাপার ল্যান্ডফিল প্রায় ১৫ তলার সমান হয়ে ওঠার পরও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা কেন নেই, পরিষেবাব্যাহত হলে বিকল্প ব্যবস্থা কী, পরিবেশ ও স্থানীয়দের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ঝুঁকিনিয়ে কোনও সরকারি সমীক্ষা হয়েছে কিনা, এই সব প্রশ্নের উত্তর এখনও অজানা।

    যদিও পুর কর্তাদের দাবি, ধাপায় প্রতিদিন কাজ সচল রাখতে পেলোডার অপরিহার্য। না হলে শহর থমকে যেতে পারে। পুরসভার নথি অনুসারে, গত সেপ্টেম্বর মাসে পেলোডারের প্রস্তাবে অনুমোদন দেন পুর কর্তৃপক্ষ। পরে প্রশাসনিক ও আর্থিক ছাড়পত্রের আবেদন করা হয়। পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গ ই-প্রকিয়োরমেন্ট পোর্টালে খোলা দরপত্র ডাকার পরিকল্পনাও রয়েছে।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)