সৌমেন মণ্ডল, হলদিয়া
সময় ফুরিয়ে আসছে। এ দিকে বিস্তর কাজও বাকি। এনিউমারেশন ফর্ম বিলি সংগ্রহের কাজ ও তো কোনও রকমে সামাল দিচ্ছেন। কিন্তু মোবাইলে ডেটা এন্ট্রি? নির্বাচন কমিশনের অ্যাপে ভোটারদের যাবতীয় তথ্য আপলোডের দায়িত্বও রয়েছে সেই বিএলও-দের (বুথ লেভেল অফিসার) কাঁধেই। এ দিকে, বহু বিএলও-ই মোবাইলে তেমন দড় নন। কল করা ছাড়া তাঁরা মোবাইল তেমন ব্যবহার করেন না। এই পরিস্থিতিতে ঘোর বিপদে পড়েছেন ওঁরা। তা হলে উপায়? তাঁদের অনেকেই বলছেন, 'রাখে পরিজন মারে কে?'
কিন্তু নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী এটা তো বেআইনি। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক হলদিয়ার এক বিএলও বলছেন, 'নিয়ম মানব নাকি চাকরি বাঁচাব? যে বিদ্যে এত দিনে রপ্ত করতে পারিনি বা তার প্রযোজনও পড়েনি, হঠাৎ করে সেই কাজ কী ভাবে করব? আমি তো কাজটা সঠিক ভাবে, নির্ধারিত সময়ে শেষ করব বলেই নিজের ঘরের লোকজনের সাহায্য নিচ্ছি।'
গত ৪ নভেম্বর থেকে এ বঙ্গেও শুরু হয়েছে 'সার' (স্পেশাল ইনটেনসিভ রিভিশন)। বাড়ি বাড়ি গিয়ে এনিউমারেশন ফর্ম জমা দেওয়া, সেগুলো সংগ্রহ করা, ভোটারের যাবতীয় তথ্য অ্যাপে আপলোড করা- সে এক বিরাট ঝক্কি। এই পুরো কাজটাই করতে হচ্ছে বিএলওদের। কিন্তু শেষ পর্যায়ের কাজটি করতে গিয়েই হিমশিম খাচ্ছেন বহু বিএলও।
পেশায় শিক্ষক, নন্দীগ্রামের এক বিএলও যেমন ছেলে ও স্বামীর 'হেল্প' নিচ্ছেন। ওই শিক্ষিকার কথায়, 'আর দু'বছর পরে আমি চাকরি থেকে অবসর নেব। মোবাইলে একেবারেই পারদর্শী নই। ছেলে ও স্বামী দু'জনেই তথ্য আপলোডের কাজে সহযোগিতা করছে। ফলে কাজটাও দ্রুত এগোচ্ছে। আমার একার পক্ষে এটা করা কোনও ভাবেই সম্ভব হতো না।' হলদিয়ার এক যুবকের কথায়, 'আমার বৌদি বিএলও। কিন্তু মোবাইলে তেমন সড়গড় নন। আমি ফর্ম আপলোড করতে সাহায্য করছি।'
তবে বিএলওদের একাংশের দাবি, 'বাড়ি বাড়ি গিয়ে ফর্ম সংগ্রহ করে যাবতীয় তথ্য আপলোড করা খুবই কষ্টকর কাজ হয়ে যাচ্ছে। নির্বাচন কমিশন থেকে এক জন ডেটা এন্ট্রি অপারেটর দিলে ভালো হতো। কিন্তু তেমন ব্যবস্থা না-থাকায় পরিজনদের সাহায্য নিতে হচ্ছে।' নন্দীগ্রাম-১ বিডিও নাজিরুদ্দিন সরকার বলেন, 'নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রত্যেক বিএলওকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকা অনুযায়ী সেই দায়িত্ব তাঁদের পালন করতে হবে।'