• বৌভাতেও এসআইআর-এর কাজে ব্যস্ত বিএলও
    আজকাল | ২৪ নভেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিয়ে করতে গিয়েও যেন শান্তি নেই। সময়মতো এসআইআর -এর কাজ শেষ করতে না পারার জন্য কখন নির্বাচন কমিশনের খাড়া নেমে আসে এই ভয়ে বিয়ের দিনও এনুমারেশন ফর্ম নিয়ে তা ডিজিটাইসড করার কাজ করলেন এক বিএলও। 

    বৌভাতের দিন অতিথি আপ্যায়নকে পাশে সরিয়ে রেখে এনুমারেশন ফর্ম ডিজিটাইজড করলেন মুর্শিদাবাদের ইসলামপুর আনন্দনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক মোস্তাক আহমেদ। অনুষ্ঠানে কোট-প্যান্ট পরে  এসআইআর -এর ফর্ম পূরণ এবং ডিজিটাইসড করার তাঁর এই ছবি সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই হইচই পড়ে গিয়েছে চারিদিকে। মুর্শিদাবাদের ডোমকল থানার অন্তর্গত ভাতশালা গ্রামের বাসিন্দা পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক মোস্তাক আহমেদ প্রতিদিন বাড়ি থেকেই প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে স্কুলে পড়াতে যান। রবিবার ছিল মোস্তাকের বিয়ের বৌভাত অনুষ্ঠান। কিন্তু নিজের জীবনের এত গুরুত্বপূর্ণ  দিনেও নির্বাচন কমিশনের কাজ থেকে এক মুহূর্তও ছুটি পাননি মোস্তাক। 

    কারণ, কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ২৫ নভেম্বরের মধ্যেই সকলকে এনুমারেশন ফর্ম জমা করতে হবে। তাই প্রচুর গ্রামবাসী  মোস্তাককে বারে বারে ফোন করে জানতে চাইছেন -ফর্ম কীভাবে পূরণ করবেন এবং কোথায় গিয়ে তা জমা দেবেন এবং এই সংক্রান্ত আরও নানারকম তথ্য। 

    প্রসঙ্গত গত ৪ নভেম্বর রাজ্য জুড়ে এসআইআর -এর কাজ শুরু হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন এলাকায় বিএলওরা বারেবারে অভিযোগ তুলেছেন তাঁদের উপর  অত্যাধিক কাজের ভার চাপিয়ে দিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কমিশনের চাপানো অত্যাধিক কাজের চাপ সামলাতে না পেরে ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন একাধিক বিএলও। আত্মহত্যা করেছেন নদিয়া জেলার এক মহিলা  বিএলও। 

    মোস্তাক জানান, "আমি যে এলাকায় শিক্ষকতা করি সেখানকার যে বুথের বিএলও-র দায়িত্ব আমাকে দেওয়া হয়েছে সেখানে ৭৭৪ জন ভোটার রয়েছেন। তাঁদের সকলকে এনুমারেশন ফর্ম বিতরণ করা, সংগ্রহ করা এবং সেই তথ্য ডিজাইটিসড করার দায়িত্ব আমার উপর।'' তিনি বলেন, "আগামী ৪ ডিসেম্বরের মধ্যে সমস্ত কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে। কিন্তু আমার বিয়ের দিনক্ষণ এসআইআর  ঘোষণার বহু আগে থেকেই ঠিক করা হয়ে গিয়েছিল। তাই বিয়ের দিন পিছনো কোনওমতেই সম্ভব ছিল না।'' মোস্তাক জানান, ''সেই কারণেই বৌভাতের দিন বাকি সব কাজ ফেলে রেখে আমাকে এসআইআর -এর কাজ নিয়ে বসতে হয়েছে, যাতে সময় মতো নির্বাচন কমিশনের কাজ শেষ করতে পারি।'' তিনি জানান, এখনও পর্যন্ত  মাত্র ৪৫ শতাংশ নথি ডিজাইটিসড করার কাজ করতে পেরেছেন। মোস্তাক বলেন, ''আমার নব বিবাহিত স্ত্রী এবং বাড়ির লোককে বুঝিয়েছি এই কাজের গুরুত্বের কথা। তাই বৌভাত এবং বিয়ের দিন আমাকে বাড়ির লোকেরা  অতিথি আপ্যায়নের কাজে তেমনভাবে না পেলেও এসআইআর-এর কাজে কেউ বিঘ্ন ঘটাতে আসেননি।''
  • Link to this news (আজকাল)