খরচ হবে না কোনও টাকা, উলটে লাভ দ্বিগুণ! খাল খননে নতুন প্রকল্প রাজ্য সরকারের
প্রতিদিন | ২৪ নভেম্বর ২০২৫
মণিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: খাল কাটার জন্য আর টাকা খরচ নয়। এবার ঠিকাদারকে খাল কাটার বরাত এবং মাটি বিক্রির সুযোগ দিয়ে দ্বিগুণ লাভ করার উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। ঠিকাদারের কাছ থেকে রাজ্য সরকার উন্নয়নমূলক কাজে বিনা পয়সায় মাটি পাবে। পাশপাশি মাটি বিক্রির টাকা থেকে রয়্যালটিও পাবে। এই প্রকল্পের পোশাকি নাম ‘রাজ্য কোষাগারের ব্যায়বিহীন মডেল’। আমতা বিধানসভা কেন্দ্রের শর্টকাট চ্যানেল খনন করা হবে এই প্রকল্পের আওতায়।
কেন্দ্রের সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। এই অবস্থায় রাজ্যের বহু নিকাশি খাল সংস্কারের কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। রাজ্যের কোষাগারেও সমস্যা রয়েছে। প্রয়োজন থাকলেও খাল সংস্কার না হওয়ায় একদিকে যেমন বর্ষায় জল জমে সমস্যায় পড়ছে সাধারণ মানুষ তেমনি সমস্যায় পড়ছেন কৃষকরা। এই সমস্যার সমাধানে এবার নতুন মডেল রাজ্য সরকারের। সরকার ‘কোষাগারের ব্যয়বিহীন মডেল’ প্রকল্প চালু করেছে খাল সংস্কারের ক্ষেত্রে।
এই প্রকল্প অনুযায়ী খাল খননের জন্য বা সংস্কারের জন্য রাজ্য সরকার কোনও টাকা খরচা করবে না। বরং যে ঠিকাদারকে খাল খননের দায়িত্ব দেওয়া হবে, তাঁকেই খাল থেকে তোলা মাটি বিক্রি করার সুযোগ দেওয়া হবে। ওই ঠিকাদার যে পরিমাণ মাটি বা পলি তুলবেন তার দশ শতাংশ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পে দিতে হবে। তাছাড়াও, তিনি যে পরিমাণ মাটি বিক্রি করবেন তাঁর ১০ শতাংশ রাজ্য সরকারকে রয়্যালটি হিসেবে দিতে হবে। সুতরাং, এই প্রকল্পের মাধ্যমে কোনও টাকা খরচ না করেই রাজ্য সরকারের কোষাগার দু’ভাবে উপকৃত হচ্ছে।
এই প্রকল্পের অধীনে আমতা দু’নম্বর ব্লকের থলিয়া থেকে বাকসী পর্যন্ত প্রায় ১১.৬৫ কিলোমিটার শর্টকাট চ্যানেলটি খনন করা হবে। এই খাল থেকে ১ কোটি ৭০ লক্ষ সিএফটি পলি তোলা হবে। খালটি খনন করার ফলে থলিয়া, জয়পুর, ঝামটিয়া, খালনা, কাশমলি ও বাকসী এই ছটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বহু চাষী এবং সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। বাম আমলে ঠিকঠাক ভাবে কাজ না হওয়ায় খালের সমস্যা থেকে যায়। পরবর্তীকালে, তৃণমূলের সময়ে এই খালের নাব্যতা বাড়ানো হয় সংস্কার করে। সম্প্রতি, আমতা দু’নম্বর ব্লকে ফের বন্যা হয়। এরপরেই আমতার বিধায়ক সুকান্ত পাল এই শর্টকাট চ্যানেল খননের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেন। এরপরেই ‘রাজ্য কোষাগারের ব্যয়বিহীন মডেল’ প্রকল্পের আওতায় এই খালটি কাটানোর উদ্যোগ নেয় রাজ্য সরকার।