‘মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা’, কমিশন এবং বিজেপিকে অভিষেকের SIR তোপ
প্রতিদিন | ২৪ নভেম্বর ২০২৫
ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ”মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। এসআইআর বাংলা বিরোধী।” ফের সুর চড়ালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এসআইআর ইস্যুতে তপ্ত বাংলা। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চড়ছে রাজনৈতিক তরজাও। এর মধ্যেই আজ সোমবার জনপ্রতিনিধি এবং পদাধিকারীদের নিয়ে মেগা সাংগঠনিক বৈঠক করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই বৈঠকে প্রায় ২৫ হাজার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। আর সেই বৈঠক থেকেই ফের একবার একযোগে নির্বাচন কমিশন এবং বিজেপিকে তোপ দাগলেন তিনি।
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”বিজেপির সহকারী সংস্থা হিসাবে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। যেভাবে জোর করে বাংলায় এসআইআর করা হচ্ছে, তাতে এক মাসের কম সময়ে ৩৫ জনকে হারিয়েছি। বিজেপির দম্ভ, ঔদ্ধত্য, অহংকারের জন্যেই এই ঘটনা।” তাঁর কথায়, ”ইতিমধ্যে তিনজন বিএলও আত্মঘাতী হয়েছেন। কমিশনকে তাঁদের পরিবার দায়ী করেছে। অনেকেই অসুস্থ। আর এই কারণেই বলেছিলাম, এসআইআর বাংলা বিরোধী। মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।” এই অবস্থায় আমরা আমাদের যতটা ক্ষমতা রয়েছে তা দিয়ে মানুষের পাশে থাকবেন বলেও জানান ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ।
অন্যদিকে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটরক্ষা শিবির চলবে বলেও এদিন ভার্চুয়াল বৈঠকে জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তাঁর কথায়, ”যতদিন না চূড়ান্ত তালিকা বেরোয় ততদিন এই শিবির চলবে।” এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে বিহারের উদাহরণ তুলে ধরেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, ”বিহারে কত মানুষ পোলিং স্টেশনে গিয়ে দেখেছেন তাঁদের তালিকায় নাম নেই। কিন্তু ড্রাফট রোলে নাম ছিল। এরপরেও কেটে দিয়েছে।” কিন্তু সেখানে বিরোধীরা তা থামাতে পারেনি। তবে তৃণমূল বাংলায় এদের চুরি ধরে ফেলবে বলেই হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। তাঁর কথায়, ”মানুষ এঁদের শাস্তি দেবে।”
কোথাও যাতে আত্মতুষ্টির জায়গা না থাকে সে বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত নেতৃত্বদের স্পষ্ট করে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, ‘দিদির দূতের অ্যাপে’র মাধ্যমে বিএলএদের কাজের উপর যে নজরদারি চলছে, তাও বুঝিয়ে দেন অভিষেক। তিনি বলেন, ”আমাদের আত্মতুষ্টিতে ভুগলে চলবে না। সেই কারণেই ভোট রক্ষা শিবির। অনেক জায়গায় ভাল কাজ হচ্ছে। ‘দিদির দূত অ্যাপ’ থেকে সেটা আমি দেখি। কোথায় কোন বিধায়ক, সাংসদ, পঞ্চায়েত প্রতিনিধি কোথায় কে দলের কাজে সময় দিচ্ছে সেটা বলে দিতে পারি। সকলের সামনে সেটা বলব। আগেও বলেছিলাম। আবারও বলছি ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ করার পর যে তথ্য সামনে আসবে তাতে যেন ১০০% ফর্ম সাবমিট করতে হবে। ৯৯ নয়, ৯৮ নয়, ১০০% করতে হবে। প্রত্যেক Bla ২ কে বলতে হবে। প্রত্যেককে এটা বাস্তবায়িত করতে হবে। এটা আপনাদের কর্তব্য দায়বদ্ধতা।”
অন্যদিকে ক্লেম অ্যান্ড অবজেকশন পিরিয়ডে যদি কারও নথি নিয়ে সমস্যা হয়, সেক্ষেত্রে বুথ প্রতিনিধি-সহ সমস্ত নেতৃত্ব যাতে পাশে দাঁড়ায়, সেই বার্তাও দেন অভিষেক। শুধু তাই নয়, ড্রাফট রোল পাবলিশ হলে ইচ্ছাকৃতভাবে কারও নাম যদি বাদ যায় তাতেও মানুষের পাশে থাকবেন বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে দলের বিধায়কদেরও টাস্ক বেঁধে দেন সাংসদ। বলেন, ”কয়েকটা দিন হাতে আছে। এক্ষেত্রে কোথাও কোনও ঘাটতি থাকলে চলবে না। লড়াইয়ের মানসিকতাই আমাদের পুঁজি।” তা বলতে গিয়েই বিধায়কদের উদ্দেশে অভিষেকের বার্তা, ”প্রত্যেক বিধায়ককে বলছি। একটা বিধানসভা কেন্দ্রে ১০ টা করে বুথ আছে। প্রত্যেকদিন ভিডিও কলে উৎসাহ দিন, সক্রিয় করুন। দরকারে বাড়ি যান। এই ১০ টা দিন চলে গেলে আর ফিরবে না। Bla ২ কে ফোন করে উৎসাহ দিন, কেমন আছেন, খেয়েছে কি না সব জিজ্ঞেস করুন। রাজ্যসভার ১৩ এমপি পঞ্চায়েত স্তরে সুপারভাইজ করছেন। ৩৩০০ গ্রামে, ৩০০০ শহরে তালিকা আমি তৈরি করে দেব। প্রতিদিন ফোন করবেন। ব্লক স্তরের উপরে যারা রয়েছেন তাদের ফোন করবেন।”