এসআইআর নিয়ে সুর চড়াচ্ছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। এবার দিল্লির রাজপথে প্রতিবাদের ডাক তৃণমূলের। সোমবার দলের নেতৃত্বের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক থেকেই সেই প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক। ১০ সাংসদকে নিয়ে একটি টিম গড়ে দিলেন তিনি। সেই সঙ্গে দেওয়া হল বিশেষ দায়িত্ব। দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দপ্তরে গিয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে দেখা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দিল্লি গিয়ে কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎকার করার জন্য সময় চাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অভিষেক। ‘অপরিকল্পিত’ এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে যাবতীয় সমস্যা পেশ করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
সূত্রের খবর, ১০ জনের এই দলে রয়েছেন লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাংসদ সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেরেক ও ব্রায়েন, শতাব্দী রায়, দোলা সেন, মহুয়া মৈত্র, প্রকাশ চিক বরাইক, সাজদা আহমেদ, মমতাবালা ঠাকুর এবং সাকেত গোখলে। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় অসুস্থ থাকায় তিনি দিল্লি যেতে না পারলে বাকি ৯ সাংসদের উপরই এই ভার থাকবে বলে জানিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দিল্লিতে এসআইআর নিয়ে প্রতিবাদের রূপরেখাও তৈরি করে দিয়েছেন তিনি।
অপরিকল্পিত এসআইআর প্রক্রিয়া ক্ষতিকর। যে বিএলও-রা মারা গিয়েছেন, তাঁরা কমিশনকে দায়ী করেছেন। তাহলে কেন কমিশনারের বিরুদ্ধে এফআইআর হবে না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। দু’মাসে তড়িঘড়ি এসআইআরের কাজের জন্য কী কী সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা কমিশনের দপ্তরে পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন অভিষেক। সে বিষয়ে ১০ সাংসদকে ভালোভাবে বুঝিয়েও দিয়েছেন তিনি।
সোমবার এসআইআরের কাজে যুক্ত দলীয় কর্মীদের নিয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভার্চুয়াল মাধ্যমে এই বৈঠকে প্রায় ২৫ হাজার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। সেখানে কাজের অগ্রগতি নিয়ে খোঁজখবর নেন তিনি। যেসব জায়গায় কম কাজ হয়েছে, তা নিয়ে কড়া বার্তা দেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। কাজ শেষ করার সময়ও বেঁধে দেন তিনি। সুষ্ঠুভাবে কাজ করার জন্য রাজ্যের মন্ত্রী-বিধায়কদের বিভিন্ন জোন ভাগ করে অতিরিক্ত দায়িত্ব দিয়েছেন অভিষেক। বৈঠক থেকে ফের একবার একযোগে নির্বাচন কমিশন এবং বিজেপিকে তোপ দাগেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বিজেপির সহকারী সংস্থা হিসাবে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। যেভাবে জোর করে বাংলায় এসআইআর করা হচ্ছে, তাতে এক মাসের কম সময়ে ৩৫ জনকে হারিয়েছি। বিজেপির দম্ভ, ঔদ্ধত্য, অহংকারের জন্যেই এই ঘটনা।‘ তিনি আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যে তিনজন বিএলও আত্মঘাতী হয়েছেন। কমিশনকে তাঁদের পরিবার দায়ী করেছে। অনেকেই অসুস্থ। আর এই কারণেই বলেছিলাম, এসআইআর বাংলা বিরোধী। মানুষের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।‘
এই অবস্থায় আমরা আমাদের যতটা ক্ষমতা রয়েছে তা দিয়ে মানুষের পাশে থাকবেন বলেও জানান ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। অন্যদিকে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটরক্ষা শিবির চলবে বলেও এদিন ভার্চুয়াল বৈঠকে জানিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তাঁর কথায়, ‘যতদিন না চূড়ান্ত তালিকা বেরোয় ততদিন এই শিবির চলবে।‘ কোথাও যাতে আত্মতুষ্টির জায়গা না থাকে সে বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত নেতৃত্বদের স্পষ্ট করে দেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।