জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: রাজ্য রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য। হঠাৎ বড় ধরনের দুর্ঘটনায় আহত তৃণমূল কংগ্রেসের (AITC) রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। সোমবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ নিজের ফ্ল্যাটের বাথরুমে পা পিছলে পড়ে গুরুতর চোট পান তিনি। বাড়ির লোকেরা তৎক্ষণাৎ তাঁকে উদ্ধার করে কাছাকাছি একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে কুণাল ঘোষকে। এক্স রে, স্ক্যান-সহ সব পরীক্ষা করা হয়েছে। চিকিৎসকরা পুরোটা পর্যবেক্ষণ করছেন। পায়ে গুরুতর আঘাত লাগায় অস্ত্রোপচার করতে হবে বলে জানা যাচ্ছে। সূত্রের খবর, মঙ্গলবার তাঁর পায়ে অস্ত্রোপচার করা হবে।
হাসপাতাল (Hospital) সূত্রের দাবি, ডান পায়ের টিবিয়া এবং ফিবুলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একাধিক জায়গায় ফ্র্যাকচার (Fracture) ধরা পড়েছে। পা ভাঙার কারণে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ জরুরি অস্ত্রোপচারের (Operation) সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন হলে প্লেট ও স্ক্রু বসিয়ে হাড় জোড়া দিতে হবে।
শুধু পায়ের চোট নয়, পড়ে গিয়ে মাথাতেও গুরুতর চোট (Injury in Head) পেয়েছেন কুণাল ঘোষ। আর মাথায় লাগায় ইন্টারনাল ব্লিডিং-এর (Internal Bleeding) আশঙ্কা থেকে তাঁকে আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে। নিউরো বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করছেন তাঁকে।
নার্সিংহোমে প্রথমে প্রাথমিক চিকিৎসা হয় এবং এক্স-রে করা হয়। পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকেরা জানান, কুণালবাবুর (Kunal Ghosh) মাথায় গভীর আঘাত লেগেছে এবং পায়ের অবস্থাও অত্যন্ত খারাপ। তাই দ্রুত সিটি স্ক্যানের নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর দুপুরে তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার একটি নামী বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
হাসপাতাল সূত্র মারফত খবর, সিটি স্ক্যান ও এমআরআই রিপোর্টে দেখা গেছে ডান পায়ের টিবিয়া ও ফিবুলা দু’টিই গুরুতর ফ্র্যাকচার হয়েছে, একাধিক জায়গায় হাড় চূর্ণ। পাশাপাশি মাথায় ইন্টারনাল ব্লিডিং-এর আশঙ্কাও রয়েছে। এই কারণে তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আগামীকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটায় তাঁর পায়ে জরুরি অস্ত্রোপচার হবে। সেক্ষেত্রে প্লেট ও স্ক্রু বসিয়ে হাড় জোড়া লাগাতে হতে পারে। মাথার চোট নিয়েও নিউরো সার্জনরা টানা নজরদারিতে রেখেছেন তাঁকে।
দল বা পরিবারের তরফ থেকে কুণাল ঘোষের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলেই জানা গিয়েছে।
শুধুমাত্র রাজনৈতিক দল নয়, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গেও যুক্ত কুণাল ঘোষ। বছর ৫৭-র এই রাজনীতিক নিয়মিত সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন ও বিভিন্ন ইস্যুতে উত্তর দেন। গত কয়েকদিনে এসআইআর আবহে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছেন কুণাল।
একসময় সারদা চিটফান্ড মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে গ্রেফতার হয়েছিলেন কুণাল ঘোষ। সেও প্রায় ১১ বছর আগের কথা। প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে ছিলেন তিনি। জেলে থাকাকালীন পরের বছর নভেম্বরে প্রেসিডেন্সির সেলে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন কুণাল। একুশ নম্বর সেলে মধ্যরাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন তিনি। সম্প্রতি সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন তিনি।