কাটল জট, গঙ্গাসাগর সেতুর নির্মাণকাজ শুরু শীঘ্রই, টেন্ডারে চূড়ান্ত নির্মাণকারী সংস্থা
বর্তমান | ২৫ নভেম্বর ২০২৫
প্রীতেশ বসু, কলকাতা: অপেক্ষার অবসান হতে চলেছে। শীঘ্রই শুরু হচ্ছে মুড়িগঙ্গা সেতুর উপর গঙ্গাসাগর সেতু নির্মাণের কাজ। বেশ কয়েক বছর ধরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই স্বপ্নের প্রকলকে বাস্তব রূপ দিতে উদ্যোগী হয়েছে নবান্ন। তবে দরপত্র সংক্রান্ত কিছু ইস্যুতে আটকে ছিল সেতু নির্মাণের কাজ। সূত্রের খবর, সম্প্রতি সেই সমস্যা মিটেছে। রাজ্য পূর্তদপ্তরের তৎপরতায় দরপত্র ডেকে নির্মাণকারী সংস্থা চূড়ান্ত করার কাজও সম্পন্ন হয়েছে। কাজের দায়িত্ব পেয়েছে লার্সেন অ্যান্ড টুব্রো (এল অ্যান্ড টি)। সেতু নির্মাণের জন্য ১৫৬৭ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে বলে খবর। ফলে বলাই যায়, পুরোদমে সেতুর কাজ শুরু হয়ে যাওয়া এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। ইতিমধ্যে সেতুর জন্য প্রয়োজনীয় জমি কেনার কাজও অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। ফলে নির্মাণকাজ শুরু করতে আর কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয় বলেই মত প্রশাসনিক মহলের। প্রতি বছর ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারির শুরুতে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী। তাই মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতেই আনুষ্ঠানিকভাবে নির্মাণকাজের দিন ঘোষণা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তার আগে অর্থদপ্তরের প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র সংক্রান্ত কাজও সেরে ফেলা হবে বলে খবর।
রাজ্যের এক আধিকারিকের কথায়, প্রস্তাবিত সেতুটি চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের হবে। এই ‘ওভারডোজড কেবল স্টেইড’ সেতুটি দাঁড়িয়ে থাকবে ২১টি পিলারের উপর। যার মধ্যে ১৯টি তৈরি হবে মুড়িগঙ্গার উপর। গোটা এশিয়ায় এটি একটি নজিরবিহীন স্থাপত্য হিসেবে গড়ে উঠবে বলেই মত ইঞ্জিনিয়ারিং বিশেষজ্ঞদের। সেতু হয়ে গেলে সাগরদ্বীপে পৌঁছতে আর শুধুমাত্র স্টিমার বা ভেসেলের উপর নির্ভর করতে হবে না। মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সাগরদ্বীপকে জুড়বে এই সেতু। গাড়ি নিয়ে সরাসরি পৌঁছে যাওয়া যাবে সাগরদ্বীপে। প্রতি বছর দেশ-বিদেশ থেকে গঙ্গাসাগর মেলায় আসেন লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থী। তাঁরা প্রত্যেকে উপকৃত হবেন। সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হতে সময় লাগবে অন্তত চার বছর। সেতু হয়ে গেলে যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিস্তর সুবিধার পাশাপাশি স্থানীয় উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশা এলাকাবাসীর।
প্রসঙ্গত, প্রথমবার দরপত্র ডেকে সাড়া না পাওয়ায় আগস্ট মাস নাগাদ পুনরায় একই উদ্যোগ নেয় পূর্তদপ্তর। এবার আরও কোনও সমস্যা হয়নি। চূড়ান্ত হয়েছে নির্মাণকারী সংস্থা। আগামী ২৭ নভেম্বর নবান্নে হবে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক। তার আগে নির্মাণকারী সংস্থা চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে হয় গঙ্গাসাগর মেলা। তাই মেলা মিটলেই নির্মাণকাজ শুরুর পক্ষে মত দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। ফলে জানুয়ারির শেষে সেতু নির্মাণ শুরু হয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।