বিভাগের সঙ্গে অসহযোগিতা এক ডিসির: কলকাতার গোয়েন্দা প্রধান
বর্তমান | ২৫ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গোয়েন্দা বিভাগকে ক্রমাগত অসহযোগিতা করে চলেছেন কলকাতা পুলিশের একজন ডেপুটি কমিশনার বা ডিসি। যার জেরে অপরাধের কিনারা করতে রীতিমতো বেগ পেতে হচ্ছে গোয়েন্দাদের। সম্প্রতি সিপি মনোজ ভার্মার উপস্থিতিতে কলকাতা পুলিশের এক বৈঠকে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেছেন খোদ ভারপ্রাপ্ত গোয়েন্দা প্রধান রূপেশ কুমার।
বৈঠকে উপস্থিত কলকাতা পুলিশের এক সূত্র জানাচ্ছেন, ওই বৈঠকে গোয়েন্দা প্রধান অভিযোগের সুরে বলেন, ‘সিঁথিতে গত ৩০ অক্টোবর প্রায় ৩ কোটি টাকা দামের ২.৪ কেজি সোনা লুটের পর লালবাজারের ডাকাতি দমন শাখার গোয়েন্দারা সংশ্লিষ্ট ডিভিশনে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে গেলে, ওই ডেপুটি কমিশনার গোয়েন্দা বিভাগের অফিসারদের দীর্ঘক্ষণ বসিয়ে রেখেছিলেন। এটা মোটেও কাম্য নয়।’
এই প্রথম নয়। কলকাতা পুলিশ মহলে এক শীর্ষকর্তার ‘স্নেহধন্য’ বলে পরিচিতি থাকা এই ডেপুটি কমিশনারের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ গোয়েন্দা বিভাগের অফিসারদের একটা বড় অংশ। তারই ফলশ্রুতিতে এবার শীর্ষকর্তাদের উপস্থিতিতে কার্যত ‘নজিরবিহীনভাবে’ সরব হয়েছেন খোদ কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান। কারণ, সংশ্লিষ্ট ডিভিশনে ডাকাতি, লুটের মতো কোনও বড় গুরুতর অপরাধ হলে, তিনি লালবাজারের গোয়েন্দাদের ঢুকতে দিতে চান না। ডিসির বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ, তাঁর ডিভিশনের থানার অফিসাররাই অপরাধের কিনারা করতে পারবেন, এই দাবিতে প্রথম দিন থেকে লালবাজারের গোয়েন্দাদের ক্রমাগত অসহযোগিতা করা হয়।
লালবাজারের গোয়েন্দাদের অভিযোগ, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বড়তলা থানা এলাকার ৩২৬/এ, সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে অসুস্থ বৃদ্ধার বাড়ি থেকে নগদ ও গয়না মিলিয়ে প্রায় ৩০ লাখ টাকার সামগ্রী লুটের ঘটনা ঘটে। এক্ষেত্রে লালবাজারের গোয়েন্দাদের এই প্রভাবশালী ডেপুটি কমিশনার বৃদ্ধা ও তাঁর কেয়ারটেকারকে প্রথম সাত-আট দিন জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেননি। ঘটনাচক্রে, এখনও এই লুটের কিনারা হয়নি। ফলে কেসটি এখন গোয়েন্দাদের গলার কাঁটা হয়ে রয়ে গিয়েছে! এ প্রসঙ্গে লালবাজারের অবসরপ্রাপ্ত এক অফিসার বলেন, ‘সাধারণত কলকাতার থানা-ফাঁড়ির অফিসাররা রোজকার আইন শৃঙ্খলা ডিউটি নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকেন। তাই ডাকাতি, লুট বা খুনের মতো গুরুতর অপরাধের দ্রুত কিনারা করতে ব্রিটিশরা দেড়শ বছরের প্রচীন কলকাতা পুলিশে গোয়েন্দা বিভাগ গঠন করেছিলেন। লালবাজারে প্রচলিত আছে, গোয়েন্দা বিভাগের এই ব্যবস্থা অগ্রাহ্য করলে, লাভের থেকে লোকসান বেশি।’