মমতাকে ফের CM করে 'ঋণশোধের' আহ্বান খোদ পুলিশকর্তাদের, কমিশনকে নালিশ শুভেন্দুর
আজ তক | ২৫ নভেম্বর ২০২৫
পশ্চিমবঙ্গে পুলিশের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতা প্রশ্নের মুখে, এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জানালেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘায় ২০ নভেম্বর ২০২৫ পুলিশ কল্যাণ কমিটির নামে অনুষ্ঠিত ‘মহিলা পুলিশ কর্মীদের দ্বিতীয় রাজ্য সম্মেলন’ নিয়ে এই অভিযোগের সূত্রপাত।
শুভেন্দুর অভিযোগ, পুলিশ কল্যাণ কমিটি হয়ে উঠেছে তৃণমূলের ফ্রন্ট সংগঠন। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে, পুলিশ কল্যাণ কমিটি 'স্বাধীন সংস্থা' হিসেবে কাজ না করে কার্যত তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। সেখানে শাসক দলের মন্ত্রী, বিধায়ক, নেতাদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন একাধিক শীর্ষ পুলিশকর্তা। ছিলেন সৌম্যদীপ ভট্টাচার্য, পুলিশ সুপার (পূর্ব মেদিনীপুর), শান্তনু সিনহা বিশ্বাস, ডিসিপি (কলকাতা পুলিশ), বিজিতস্ব রাউত, আহ্বায়ক, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ কল্যাণ কমিটি।
বিরোধী নেতার অভিযোগ, এসব কর্মরত পুলিশদের রাজনৈতিক কাজে জড়াতে উৎসাহিত করছেন, এমনকি বহু পুলিশ সদস্য তৃণমূলের প্রচারে সরাসরি যুক্ত। চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, কলকাতা পুলিশের পরিদর্শক বিজিতস্ব রাউত প্রকাশ্যে শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে ঘোষণা করেন, 'লড়াই শুরু হয়েছে এবং ২০২৬ সালের মে পর্যন্ত চলবে। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চতুর্থবারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী করব।'
শুভেন্দুর দাবি, এটি একজন সক্রিয় পুলিশ অফিসারের মুখ থেকে বেরোনো 'রাজনৈতিক যুদ্ধ ঘোষণা', যা পুলিশের নিরপেক্ষ ভূমিকার সরাসরি লঙ্ঘন। ডিসিপি শান্তনু সিনহা বিশ্বাসের বক্তব্য নিয়েও চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অধিকারী। তিনি নাকি পুলিশ বাহিনীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 'তাদের অভিভাবক, নির্বাচনে ঋণ শোধ করতে হবে।' মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি আখ্যা দেন 'ভারতের ভবিষ্যৎ নেত্রী'
বিরোধী নেতার শুভেন্দুর দাবি, এই বক্তব্য পুলিশের সাংবিধানিক অবস্থানকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে। চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, অনুষ্ঠানটিতে উপস্থিত তৃণমূলের মন্ত্রী শিউলি সাহা (প্রতিমন্ত্রী), মানস রঞ্জন ভুঁইয়া (মন্ত্রী) মঞ্চকে ব্যবহার করেছেন সরাসরি কেন্দ্রবিরোধী ভাষণে। শিউলি সাহা নাকি বিরোধীদের উদ্দেশ্যে 'মোদীর জুতো চাটছে' বলে কটাক্ষ করেন। মানস ভুঁইয়া SIR আপডেটকে 'বিশাল কেলেঙ্কারি' বলেন এবং বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে কেন্দ্র তহবিল আটকে রেখেছে বলে দাবি করেন।
বিরোধী নেতার অভিযোগ, একটি পুলিশ সম্মেলনকে তৃণমূলের প্রচারমঞ্চে পরিণত করা হয়েছে। ১০০০-রও বেশি পুলিশ কর্মী রাজনীতিতে সক্রিয়। চিঠিতে দাবি করা হয়েছে, কলকাতা ও রাজ্য পুলিশের ১০০০-রও বেশি সদস্য ও সমসংখ্যক সিভিক ভলান্টিয়ার তৃণমূলের রাজনৈতিক কাজে লাগানো হচ্ছে। তাঁরা দলের টি-শার্ট পরে সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। দলীয় পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করছেন। পুলিশ পরিবারদের মিডিয়া প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন