মৃত্যুঞ্জয় দাস: কাজ করার সময় আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়লেন মহিলা বিএলও। আজ সকালে বাড়ি বাড়ি ঘুরে এনুমারেশান ফর্ম সংগ্রহের সময় আচমকাই বুকে ব্যথা অনুভব করায় তড়িঘড়ি ওই বিএলওকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে হাজির হয়ে কেঁদে ভাসালেন তিনি। এই ঘটনায় শুরু হয়েছে শাসক বিরোধী রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূল এর যাবতীয় দায় বিজেপির কাঁধে তুলে সমালোচনায় সরব হয়েছে। পাল্টা এই ঘটনার দায় তৃণমূলের বলে দাবি করেছে বিজেপি। বিজেপির দাবি তৃণমূলের চাপ ও হুমকির মুখে পড়েই বিএলওরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। ঘটনা বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের ব্লকের নারায়নপুর ২২৪ নম্বর বুথের।
বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের ব্লকের ২২৪ নম্বর বুথের নারায়ণপুর গ্রামে বিএলও হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন আইসিডিএস সুপারভাইজার সবিতা সর্দার। ওই বুথে মোট ভোটারের সংখ্যা ১০৯৮ জন। কর্মসূত্রে নারায়ণপুর এলাকায় ভাড়াবাড়িতে থাকেন ওই বিএলও। বাড়িতে রয়েছে তাঁর শিশু সন্তান। এলাকার মানুষকে সেভাবে তিনি চেনেন না। তাছাড়া পারিবারিক সমস্যা রয়েছে। এই কারণে এসআইআর-এর দায়িত্ব নেওয়ার সময়ই তিনি আপত্তি জানিয়েছিলেন। এই কাজ থেকে অব্যাহতি চেয়ে দরবার করেছিলেন প্রশাসনিক বিভিন্ন দফতরে এমনকি দিদিকে বলো ফোন নম্বরেও। কিন্তু কিছুতেই লাভ হয়নি। অচেনা এলাকায় ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে এস আই আর এর প্রাথমিক কাজ হিসাবে এনুমারেশান ফর্ম বিতরণের কাজ শেষ করেছেন। এখন বাড়ি বাড়ি ঘুরে ফর্ম সংগ্রহের পাশাপাশি চলছিল রাত জেগে সেই ফর্মের তথ্য নির্বাচন কমিশনের পোর্টালে আপলোডের কাজ। ওই বিএলও র দাবি অতিরিক্ত এই কাজের চাপে আজ ভোটারদের বাড়ি বাড়ি ঘুরে ফর্ম সংগ্রহের সময় আচমকাই তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করেন। অসুস্থ অবস্থায় দ্রুত তিনি কাজ ছেড়ে হাজির হন পাত্রসায়ের ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সেখানে কাজের চাপে দিশেহারা সবিতা সর্দার ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেন। কমিশনের দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তিনি কী করে কাজ সম্পূর্ণ করবেন তা নিয়ে রীতিমত দুশ্চিন্তা ধরা পড়ে তাঁর গলায়।
এদিকে বিএলও অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর জানাজানি হতেই হাসপাতালে তাঁকে দেখতে হাজির হন তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুব্রত দত্ত। তিনি এই ঘটনার সম্পূর্ণ দায় চাপিয়েছেন বিজেপির কাঁধে। তাঁর দাবি নির্বাচন কমিশন বিজেপির কমিশনে পরিণত হয়েছে। বিজেপির নির্দেশেই ২ বছরের কাজ এক মাসে করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। অতিরিক্ত সেই কাজের চাপেই এভাবে বিএলও রা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এই ঘটনায় পাল্টা তৃনমূলকে খোঁচা দিয়ে বিজেপির দাবি, এস আই আর প্রক্রিয়ার শুরুর থেকেই তৃনমূলের পক্ষ থেকে সর্বত্র বিএলওদের চাপ ও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আর তাতেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বিএলওরা। এক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়ে থাকতে পারে।