উলুবেড়িয়ার দুর্ঘটনাতেও নড়ল না টনক! সিএফ ফেল, রিসোল টায়ার পুলকারেই চলছে নিত্য ঝুঁকির যাত্রা
প্রতিদিন | ২৫ নভেম্বর ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার: চারটে চাকাতেই রিসোল টায়ার, একদিকে নেই জানলার কাচ, ইন্ডিকেটর ভাঙা, ভিতরের সিটেরও তেমনই হাল। পাঁচজনের বসার সিটে তোলা হয়েছে ৮ থেকে ৯ জনকে। খুদে পড়ুয়াদের বসিয়ে এমনই পুলকার ছুটে বেড়াচ্ছে শহরতলির রাস্তায়। সবথেকে বড় বিষয়, কলকাতার ভিতরেই ব্যক্তিগত নাম্বারপ্লেটের গাড়িই বে-আইনিভাবে ছোটানো হচ্ছে পুলকার হিসাবে। সোমবার বিকেলে উলুবেড়িয়ায় পুলকার (Pool Car) উল্টে তিন স্কুলছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু ফের একবার প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়েছে স্কুলে যাতায়াতের মাধ্যম হিসাবে এই পুলকারের ভূমিকাকে। এই পুলকারের তালিকায় কি নেই!
জেলায় তো ছোট চার চাকার ভ্যান, ম্যাজিক গাড়ি, ব্যক্তিগত গাড়ি, টোটো কিংবা কোথাও কোথাও লজঝড়ে ছোট বাসকে পড়ুয়াদের নিয়ে রাস্তায় ছুটতে দেখা যায়। পুলিশ-প্রশাসনের সামনে সব হলেও কারও কোনও হেলদোল নেই বলেই অভিযোগ। ব্যক্তিগত মালিকাধীন গাড়ি স্কুলগাড়ি হিসেবে বে-আইনিভাবে চলছে যুগযুগ ধরে। যে সব গাড়িতে আসন সংখ্যা সাত সেখানে ১২-১৫ জন পড়ুয়া নিয়ে গাড়ি ছুটছে। তার না করানো হয়, সিএফ, না দূষণ পরীক্ষা। বাচ্চাদের স্কুলে দেরি হয়ে যাওয়ার দোহাই দিয়ে দিনের পর দিন ছোটানো হচ্ছে সেই সমস্ত গাড়ি। এর ফলে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা।
পরিবহন দপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, হুগলির পোলবায় পুলকার দুর্ঘটনায় এক পড়ুয়ার মৃত্যুর পরই নড়েচড়ে বসেছিল পরিবহন দপ্তর। বে-আইনি পুলকার ধরপাকড় শুরুও হয়। কিন্তু আচমকাই তা আবার থেমে যায়। পরিবহন দপ্তর একটি গাইডলাইনও তৈরি করে পুলকারের। তা প্রকাশ হয়। কিন্তু কে মানছে সেই গাইডলাইন? বেশি ধরপাকড় করতে গেলে অভিভাবকরাই বলছেন, গাড়ি বন্ধ করে দিলে ছোট ছোট শিশুরা স্কুলে যাবেই বা কি করে! অভিভাবকদের কথায়, যখন কোনও দুর্ঘটনা ঘটে, তখনই হইচই হয়, আবার সব থেমে যায়। কোনও গাইডলাইনই আর মানা হয় না। শহর কলকাতাতেও বে-আইনিভাবে ব্যক্তিগত গাড়িতে চলছে স্কুলপড়ুয়া-আনা-নেওয়ার কাজ। অভিযোগ, পুলিশের একাংশের মদতেই তা চলে।
পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ দত্ত বলেন, “ছোট ছোট শিশুরা যে গাড়িতে যায়, তার সিএফ নিয়ম করে অবশ্যই করানো উচিৎ। পুলিশেরও উচিৎ বিষয়টি নজরদারির মধ্যে আনা। তাছাড়া ব্যক্তিগত নাম্বারপ্লেটের গাড়িতেও পড়ুয়া বহন করা চলছে। এগুলো দেখা উচিৎ।”