• সোনাগাছিতে SIR-এর জন্য ‘বিশেষ হিয়ারিং ক্যাম্প’-এর ব্যবস্থা, থাকবেন CEO স্বয়ং, যৌনকর্মীদের জন্য স্বস্তির খবর
    এই সময় | ২৬ নভেম্বর ২০২৫
  • শুভ্রজিৎ চক্রবর্তী

    রাজ্যজুড়ে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) চালু হওয়ার পর থেকেই আতঙ্কের চোরা স্রোত বইছিল এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ যৌনপল্লি সোনাগাছিতে। বাংলায় SIR প্রক্রিয়া শুরুর ১৭ দিনের মাথায় রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়ালকে চিঠি দিয়ে নিজেদের সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন যৌনকর্মীরা। তবে, নিজেরা নয়, তাঁদের সন্তানদের নিয়ে কাজ করা তিনটি সংগঠন- 'সোশাইটি অফ হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাকশন’, ‘উষা মাল্টিপার্পাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ এবং ‘আমরা পদাতিক’-এর পক্ষ থেকে যৌনকর্মীদের এই সমস্যার বিষয়টি কমিশনে জানানোর ব্যবস্থা করা হয়। আর সেই খবর সামনে এনেছিল ‘এই সময় অনলাইন’।

    এ বার যৌনকর্মীদের জন্য স্বস্তির খবর। সোনাগাছিতে ‘বিশেষ হিয়ারিং ক্যাম্প’-এর ব্যবস্থা করবে নির্বাচন কমিশন, মঙ্গলবার ‘এই সময় অনলাইন’-কে জানান রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল। তিনি এ দিন জানান, সোনাগাছির যৌনকর্মীদের জন্য বিশেষ ক্যাম্প করে হিয়ারিং-এর ব্যবস্থা করা হবে। সেখানে সশরীরে উপস্থিত থাকার কথাও জানিয়েছেন মনোজ আগরওয়াল।

    চিঠিতে যৌনকর্মীদের জন্য কাজ করা একাধিক সংগঠনের পক্ষ থেকে মূলত তিনটি সমস্যার কথা তুলে ধরেছিল। প্রথমত, অনেক সময়ে গ্রাম বা ভিন রাজ্য থেকে সোনাগাছিতে আসেন অনেকে। তাঁদের পক্ষে ২০০২ সালের নথি জোগাড় করা সমস্যার বিষয়। দ্বিতীয়, যৌনকর্মীদের বক্তব্য, ‘উষা মাল্টিপার্পাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’-এর অ্যাকাউন্টকে নথি হিসেবে ধরে ২০০৭ সালে তৎকালীন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দেবাশিস সেন সোনাগাছিতে গিয়ে যৌনকর্মীদের অনেককে ভোটার আইডি দিয়েছিলেন। যৌনকর্মী এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ভোটার কার্ড যেন বাতিল করা না হয়। যৌনকর্মীদের এনিউমারেশন ফর্ম পূরণের জন্য আয়োজিত হোক বিশেষ শিবির এবং তাঁদের জন্য বিকল্প নথি বা পরিচয়পত্র নির্ধারিত করা হোক।

    যৌনকর্মীদের সংশয় নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ‍্য নির্বাচনী আধিকারিক মনোজ আগরওয়াল বলেন, ‘সোনাগাছিতে বিশেষ হিয়ারিং ক্যাম্প-এর ব্যবস্থা করবে কমিশন। আমিও সেখানে উপস্থিত থাকব।’ সোনাগাছিতে প্রায় ১০ হাজার যৌনকর্মীর আনাগোনা। প্রায় ৭ হাজার যৌনকর্মী সেখানে স্থায়ী ভাবে বসবাস করেন এবং প্রায় ৩ হাজার যৌনকর্মী সেখানে রোজ পেশার তাগিদে আসেন। বহু যৌনকর্মী বৈধ নথি দেখিয়ে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প যেমন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বিধবাভাতার উপভোক্তা। বহু রাত পর্যন্ত সেখানকার রাস্তাঘাটে আলো জ্বললেও আদতে সেখানে বহু মানুষের জীবনে এখনও রয়েছে অন্ধকার, দাবি যৌনকর্মীদের একাংশের। তার উপরে SIR এনে দিয়েছিল একাধিক শঙ্কাও। কমিশনের এই সিদ্ধান্তে কি তবে স্বস্তি ফিরবে সোনাগাছিতে? উঠছে প্রশ্ন।

  • Link to this news (এই সময়)