সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: সোনালি বিবির পুশব্যাক মামলায় তুলোধোনা সুপ্রিম কোর্টের। মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে ওঠে মামলা। প্রধান বিচারপতি সোনালি বিবির অন্তঃসত্ত্বা হওয়া-সহ অন্যান্য তথ্য চান। তাতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, এখনও প্রস্তুত নন। তাই কিছুটা সময় দিতে হবে। তাতেই রেগে যান প্রধান বিচারপতি। বলেন, “সময়ের দাম নেই? আপনারাই শুনানির সময় চাইবেন, সময় দিলে বলবেন প্রস্তুত নন। গুরুত্ব বুঝতে পারছেন না? কী হচ্ছে এটা?” তাতে ইতস্তত করেন তুষার মেহতা। আগামী ১ ডিসেম্বর
মামলার পরবর্তী শুনানির সম্ভাবনা।
কয়েকমাস আগে দানিশ শেখ, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সোনালি বিবি ও তাঁদের পাঁচ বছরের শিশুপুত্র-সহ ৬ জনকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। বীরভূমের মুরারইয়ের পাইকর গ্রামের বাসিন্দা ওই পরিবারকে চলতি বছরের গত ১৮ জুন দিল্লির রোহিনী জেলা পুলিশের কেএন কাটজু থানা থেকে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করেছিল। পরিবারের সদস্যরা জানান, সেদিনই ধৃতরা ফোন করে খবর দেন যে পুলিশ তাঁদের বাংলাদেশি সন্দেহে গ্রেপ্তার করেছে। সঙ্গে সঙ্গেই পরিবারের লোকজন দিল্লি রওনা হন। কিন্তু থানায় পৌঁছেও তাঁদের সমস্যার কোনও সুরাহা হয়নি। পুলিশ জানায়, ধৃতদের বিএসএফের হাতে তুলে দিয়ে বাংলাদেশে পুশব্যাক করে দেওয়া হয়েছে। কোন এলাকা দিয়ে তাঁদের সীমান্তে নিয়ে যাওয়া হয়, তা জানানো হয়নি। সেই ঘটনার জল গড়ায় আদালতে। পরবর্তীতে কলকাতা হাই কোর্ট সাফ জানায়, কেন্দ্রকে অবিলম্বে সোনালি বিবিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। সময় বেঁধে দেওয়া হয় চার সপ্তাহ। যদিও কেন্দ্র তার পরিপ্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ করেছে জানা যায়নি। এরই মাঝে ধৃতদের ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশ হাই কোর্টের তরফে চিঠি পাঠানো হয় ভারতীয় হাই কমিশনে।
ওই পরিবারের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদ। ওই মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতের নির্দেশ ছিল, সোনালি এবং তাঁর পরিবারকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তার ভিত্তিতে করা হেবিয়াস কর্পাস মামলা শুনবে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। সেখানেই কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে তা খারিজ করে দেওয়া হয়। কেন্দ্রকে অবিলম্বে তাঁদের দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেওয়া হয়। সময় বেঁধে দেওয়া হয় চার সপ্তাহ। এখনও সোনালি বিবিকে ফেরানো হয়নি।