অর্ণব দাস, বারাসত: বারাসত মর্গে মৃতের চোখ চুরির অভিযোগে বিক্ষোভ। তাতে আটকে যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়। সেখানে মৃতের পরিজনদের সঙ্গে কথা বলে মৃতের পরিবারের একজনকে চাকরি দেওয়ার পাশাপাশি আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি অপরাধ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির কথা বলেছেন মমতা (Mamata Banerjee)।
মৃতের নাম প্রীতম ঘোষ। বয়স ৩৫ বছর। তিনি কাজীপাড়া কাজীপাড়ার নেতাজিনগরের বাসিন্দা। তিনি এলাকারই একটি দোকানে কাজ করতেন। সময় পেলে অনলাইন বুকিং বাইক চালাতেন। সোমবার খুব ভোরে কাজীপাড়া রেলগেট সংলগ্ন যশোররোডে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ছোট মালবাহী গাড়ি তাকে ধাক্কা মারে। মাথায় গুরুতর আঘাত রক্তাক্ত অবস্থায় দেহ উদ্ধার করে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এরপর ময়নাতদন্তের জন্য মৃতদেহ বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিন দুপুরের পর মৃতের পরিবার সৎকারের জন্য মৃতদেহ নিতে মর্গে এসেছিল। অভিযোগ, তখনই তাঁরা দেখে চোখে দেওয়া তুলসী পাতা। এতেই সন্দেহ হলে তুলসী পাতা সরাতেই দেখা যায় একটি চোখ নেই। তখনই ক্ষোভে ফেটে পড়ে পরিবার।
মৃত প্রীতম ঘোষের এক আত্মীয়ার অভিযোগ, “আমরা দেহ নেওয়ার সময় দেখি একটা চোখ নেই। বাকিদের জানাতেই পরিষ্কার হয় প্রথমে চোখ ছিল। হাসপাতাল বলছে ইঁদুর চোখ নিয়ে গিয়েছে যদি তাই হতো তাহলে, তার চিহ্ন থাকত। এখানে অঙ্গ পাচার চক্র চলছে।”
এদিকে বনগাঁয় রাজনৈতিক সভা শেষে কলকাতায় ফিরছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বিক্ষোভে আটকে পড়েন তিনি। ডেকে নেন মৃতের পরিবারের সদস্যদের। কথা বলেন তাঁদের সঙ্গে। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, তদন্তের নির্দেশ দিলাম। যদি এই ঘটনা কেউ করে থাকে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে। যে পরিবারের সঙ্গে এমনটা হয়েছে, তাদের প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। পরিবার বিচার পাবে। অপরাধ করে থাকলে শাস্তি দেওয়া হবে।”
উপস্থিত পুলিশ প্রশাসনের কর্তাদের বাড়ির ঠিকানা লিখে নেওয়া-সহ মৃতের মায়ের বায়োডাটা নেওয়ার নির্দেশ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর কোটায় বছরে ২টি চাকরি হয়। কাছাকাছি জায়গায় তারমধ্যে একটি চাকরি মৃতের মা পাবে, যাতে সংসার চলে। প্রথম বছর প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা করে মাইনে পাবে। তারপর পার্মানেন্ট হয়ে যাবে। ২দিন সময় নিচ্ছি। বুধবার বাড়িতে গিয়ে বায়োডাটা নিয়ে বৃহস্পতিবার বাড়িতে চাকরি নিয়োগপত্র পোঁছে যাবে।” তারপর কলকাতায় রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী।