• বন্ধুর ‘আনফিট’ গাড়ি ব্যবহারেই কাল! উলুবেড়িয়া কাণ্ডে চালকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ
    প্রতিদিন | ২৬ নভেম্বর ২০২৫
  • মনিরুল ইসলাম, উলুবেড়িয়া: উলুবেড়িয়া পুলকার দুর্ঘটনায় নয়া মোড়! দুর্ঘটনায় অভিশপ্ত গাড়িটির চালক শ্রীমন্ত বাগের ছিলই না। একদিনের জন্য এক বন্ধুর কাছ থেকে তা নিয়েছিলেন বলে জেরায় জানিয়েছেন শ্রীমন্ত। শুধু তাই নয়, গাড়িটির ফিটনেস, বীমা বাতিল হয়ে গিয়েছে, অর্থাৎ গাড়িটি ‘আনফিট’ জেনেও সেটি নিয়েই পড়ুয়াদের আনতে তিনি গিয়েছিলেন বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।

    অন্যদিকে পুলকার পুকুরে পড়ে তিন স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে হাওড়া আঞ্চলিক পরিবহন দপ্তরও। হাওড়ার গ্রামীণ জেলার সমস্ত বেসরকারি স্কুলের কর্তৃপক্ষদের নিয়ে বৈঠক বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী বুধবার এই বৈঠকের কথা রয়েছে উলুবেড়িয়া মহকুমা শাসকের দপ্তরে। কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি পুলিশ, অভিভাবকরাও থাকবেন বলে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি মঙ্গলবার আঞ্চলিক পরিবহন দপ্তরের পক্ষ থেকে উলুবেড়িয়ার বিভিন্ন জায়গায় স্কুল গাড়ি ও পুলকার চেকিং করা হয়েছে।

    অন্যদিকে ঘটনার পর থেকেই ধৃত পুলকার চালককে দফায় দফায় জেরা করছেন পুলিশ আধিকারিকরা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসা করে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, গাড়িটি শ্রীমন্ত বাগের ছিল না। এক বন্ধুর কাছ থেকে একদিনের জন্য সে নিয়েছিল। আর তাতেই দুর্ঘটনা ঘটে। যদিও অভিযুক্ত শ্রীমন্তের নিজেরও একটি গাড়ি রয়েছে। সেই গাড়িও পড়ুয়াদের নিয়ে আসা-যাওয়া করে। কিন্তু ঘটনার দিন কেন অন্যের গাড়ি নিতে হল তাঁকে? শ্রীমন্ত পুলিশকে জানিয়েছেন, তার নিজের গাড়িটি অন্য একটি স্কুলে শিশুদের ছাড়তে গিয়েছিল। ফিরতে দেরি হচ্ছিল। এদিকে পড়ুয়ারাও দাঁড়িয়েছিল। পড়ুয়াদের সময়মতো স্কুল পৌঁছে দেওয়ার জন্য এক বন্ধুর কাছ থেকে এই গাড়িটি নিয়েছিল। শুধু তাই নয়, গাড়িটি আনফিট জেনেও তা কেন নিল? সূত্রের খবর, জেরায় শ্রীমন্ত বাগ জানিয়েছেন বেশি দূরে যেতে হবেনা এটা ভেবেই সব বন্ধুর ওই গাড়িটি নিয়েছিল। গাড়িটি বন্ধুর বাড়িতে পড়ে থাকত। সেই কারণে সে নিয়েছিল। এই বিষয়ে আরও তথ্য জানতে আঞ্চলিক পরিবহন দপ্তর থেকে তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে পুলিশ।

    এদিকে গাড়ি কারা ঠিক করে এটা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। স্কুলের মালিক শেখ শাহ আলম জানিয়েছে, যে গাড়ি শিশুদের নিয়ে গিয়েছিল তার সঙ্গে স্কুলের কোন সর্ম্পক নেই। তাছাড়া তার আরও দাবি, গাড়ি ঠিক করে অভিভাবকেরাই। যদিও অভিভাবকদের বক্তব্য, স্কুল কর্তৃপক্ষই গাড়ি ঠিক করে দিয়েছিল। তারা প্রতিমাসে ৮০০ টাকা করে ভাড়া দেয় মাত্র। আগে অন্য একজন চালক গাড়ি চালাত। সে মদ্যপ থাকতো বলে প্রতিবাদ করায় স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে বদলে দেয়। এ বছর থেকে শ্রীমন্ত গাড়ি চালাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন অভিভাবকরা।

    বলে রাখ প্রয়োজন, সোমবার রাতেই শ্রীমন্তকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা দায়ের করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। মঙ্গলবার তাঁকে উলুবেড়িয়া আদালতে তোলা হয়। বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
  • Link to this news (প্রতিদিন)