• কল্যাণীতে পণ্যবাহী জাহাজে ধাক্কা নৌকার, কোনওমতে প্রাণ বাঁচল পড়ুয়া-সহ শ’খানেক যাত্রীর
    প্রতিদিন | ২৬ নভেম্বর ২০২৫
  • সুবীর দাস, কল্যাণী: উলুবেড়িয়ার পুলকার দুর্ঘটনার ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। তারমধ্যেই মাঝ গঙ্গায় বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেল যাত্রীবোঝাই নৌকা। কোনওমতে প্রাণে বাঁচলেন প্রায় একশোর কাছাকাছি যাত্রী। তাদের মধ্যে অধিকাংশ যাত্রী স্কুল পড়ুয়া। আতঙ্কে জ্ঞান হারায় কয়েকজন পড়ুয়া। তবে কারও কোনও বড়সড় ক্ষতি হয়নি। ঘটনার পর নৌকার  চালকদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন যাত্রী ও পড়ুয়াদের অভিভাবকরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে কল্যাণীর ত্রিবেণী ঘাটের কাছে মাঝ গঙ্গায়।

    নদিয়ার কল্যাণী ব্লকের চরযাত্রা-সিদ্ধি চন্দ্রহাটি ঘাট থেকে হুগলি পর্যন্ত ভটভটি নৌকায় দৈনন্দিন যাতায়াত করেন বহু মানুষ। স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে চাকরিজীবী অনেকেই ভাগীরথী নদী পারাপার করেন। এদিন বিকেলে হুগলি থেকে চরযাত্রা সিদ্ধি উদ্দেশ্যে একটি যাত্রীবোঝাই ভটভটি ছাড়ে। বিকেলের সময় হওয়ায় প্রচুর যাত্রী উঠেছিলেন। ছাড়ার পরই নৌকাটি হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘুরতে ঘুরতে ত্রিবেণী ঘাটের দিকে ভেসে যায়। ত্রিবেণী ঘাট সংলগ্ন থার্মাল পাওয়ার স্টেশনের সামনে মাঝ নদীতে একটি পণ্যবাহী জাহাজে ধাক্কা মারে। সেই সময় পাশ দিয়ে যাওয়া ইট বোঝাই একটি নৌকা যাত্রীদের উদ্ধার করে নিরাপদে কল্যাণীর চরযাত্রা সিদ্ধি চন্দ্রহাটি ঘাটে নিয়ে আসে। উদ্ধার করা হয় বিপদগ্রস্ত ওই নৌকাটিকেও।

    খবর ছড়িয়ে পড়তেই ঘাটে ভিড় জমাতে থাকেন অভিভাবকরা। চালকদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তাঁরা। অভিযোগ তোলেন, ৩০-৪০ জন যাত্রী নেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা মানা হয় না। সেফটি বা লাইফ জ্যাকেট থাকলেও সেগুলো ব্যবহার করা হয় না। জীবন হাতে নিয়েই নদিয়া ও হুগলির মধ্যে যাতায়াত করেন যাত্রীরা।

    সুস্মিতা মাহাতো নামে এক স্কুলছাত্রী জানায়, “নৌকায় জাল আটকে যাওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটে। ইট বোঝাই নৌকা আমাদের জীবন বাঁচায়।” অপর এক ছাত্রী প্রিয়া মাহাতোর কথায়, “বেঁচে ফিরব ভাবতে পারিনি। প্রতিনিয়ত এভাবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভটভটি নৌকা করে নদী পারাপার করতে হয়। নির্দিষ্ট ভাড়া দিয়েই আমরা যাতায়াত করি, তারপরেও আমাদের নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা নেই।”

    নৌকা চালক, বাপি মাহাতো ও অপর এক মাঝি বলেন, “নৌকার পাখায় কিছু একটা বেঁধে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারাই। জলে ঝাঁপ দিয়ে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করি। কিন্তু ততক্ষণে নৌকা ভুল পথে চলে গিয়েছিল। সেই অর্থ যাত্রীদের কোনও বিপদ হয়নি। নৌকাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।” তাঁদের আরও দাবি, “দু’টো মাত্র নৌকা। সেফটি জ্যাকেট আছে সংখ্যায় ৩০টার মতো। কিন্তু যাত্রী অনেক হয়। কাউকে ফেরানো সম্ভব হয় না। তাই ঝুঁকি নিয়েই নৌকা চালাতে হয়। “
  • Link to this news (প্রতিদিন)