• ফের মৃত্যু! নিয়ম কবে মানবে পর্যটন সংস্থা?
    এই সময় | ২৬ নভেম্বর ২০২৫
  • এই সময়, শিলিগুড়ি: সান্দাকফু আছে সান্দাকফুতেই। নিয়মবিধির কোনও বালাই নেই। কোনও জরুরি স্বাস্থ্য পরিষেবা নেই। উঁচু পাহাড়ের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে পর্যটকেরা সেখানে যাচ্ছেন কি না, সেটা দেখারও কেউ নেই। সান্দাকফুতে পর্যটকদের যাওয়ার ব্যাপারে দার্জিলিং জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মানা হচ্ছে না। এই অভিযোগ তুলে এ বার রাজ্য সরকারের দ্বারস্থ হচ্ছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের দাবি, রাজ্য পর্যটন দপ্তর সান্দাকফু নিয়ে নির্দেশ জারি করুক এবং সেই নির্দেশ মেনে চলার জন্য জেলা প্রশাসন এবং জিটিএকে বাধ্য করা হোক।

    সোমবার সান্দাকফুতে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয় এক বৃদ্ধা পর্যটকের। তাঁর নাম অনিন্দিতা গঙ্গোপাধ্যায় (৭২), বাড়ি যাদবপুরে। অবিবাহিত অনিন্দিতা তাঁর বোনের সঙ্গে দার্জিলিংয়ে বেড়াতে এসেছিলেন। ২৪ নভেম্বর তাঁরা সান্দাকফুতে আসেন। সেখানে পৌঁছেই অসুস্থ হয়ে পড়েন বৃদ্ধা। শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। সন্ধ্যায় তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকায় চালকরা তড়িঘড়ি সুখিয়াপোখরি ব্লক হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে চিকিৎসকরা অনিন্দিতাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। রাতেই তাঁর দেহ সুখিয়াপোখরি থেকে দার্জিলিংয়ে আনা হয়। আজ ময়না তদন্তের পরে দেহ কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়।

    জিটিএ-র দাবি, সান্দাকফু রওনা হওয়ার আগে পরিবারটি মানেভঞ্জনে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেই যায়। সান্দাকফুতে বেড়াতে গিয়ে এমন মৃত্যুর ঘটনা প্রথম নয়। এর আগেও বেশ কয়েকজনের ওই পাহাড়ি এলাকায় মৃত্যু হয়েছে। গত বছর দার্জিলিং জেলা প্রশাসন থেকে পর্যটকদের একটি গাইড লাইন দেওয়া হয়। জিটিএ-র পক্ষ থেকে মানেভঞ্জনে চিকিৎসকদের দিয়ে শারীরিক পরীক্ষার পরেই পর্যটকদের সান্দাকফুতে যেতে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। শেষ পর্যন্ত কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

    হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, 'সান্দাকফু সব বয়সের পর্যটকদের জন্য নয়। অথচ, ইদানীং একটা ট্রেন্ড হয়েছে, সবাই গাড়িতে সান্দাকফু পৌঁছে যাচ্ছেন। তার পরেই কিছু পর্যটকের নানা শারীরিক সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সান্দাকফুতে কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই।

    ফলে গাড়িতে করে ৭৫ কিলোমিটার দূরে সুখিয়াপোখরি ব্লক হাসপাতালে আনার আগেই সব শেষ হয়ে যায়। রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ ছাড়া এসব বন্ধ করা যাবে না।' সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্য পর্যটন দপ্তরকে চিঠি দিয়ে দ্রুত সান্দাকফুতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং মানেভঞ্জনে পর্যটকদের শারীরিক পরিস্থিতি পরীক্ষা করার পরেই যেতে দেওয়ার অনুমতির ব্যবস্থা করার আর্জি জানানো হবে। জানা গিয়েছে, গঙ্গোপাধ্যায় পরিবার কোনও অনামী পর্যটন সংস্থার হাত ধরে সান্দাকফু এসেছিলেন। ফলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভূঁইফোড় পর্যটক সংস্থাগুলির সমালোচনা শুরু হয়েছে।

    জিটিএর অন্যতম উপদেষ্টা এসপি শর্মা বলেন, 'মানেভঞ্জনে এখন স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। যাওয়ার আগে ওই পর্যটক দলটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়। চালকেরা সান্দাকফুতে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তার পরেও কেন এমন হলো, সেটা খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।'

  • Link to this news (এই সময়)