এই সময়, শিলিগুড়ি: চিকেনস নেক বা শিলিগুড়ি করিডর তো রয়েছেই। এ রাজ্যে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা সার শুরু হওয়ায় বাড়তি সতর্কতা নিতে হচ্ছে। কারণ 'সার'-এর জেরে এ রাজ্যে থাকার ঝুঁকি নেবেন না বাংলাদেশিরা। কিন্তু রাজ্যের জমি ব্যবহার করে নেপালে চলে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সীমান্ত সুরক্ষায় আরও সক্রিয় হচ্ছে সশস্ত্র সীমা বল (এসএসবি)। ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের নেপাল ও ভুটান সীমান্তে অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি, সীমান্ত সংলগ্ন রাস্তায় যানবাহনের উপরে নজরদারি বাড়াতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হতে চলেছে। মঙ্গলবার বিষয়টি জানান এসএসবির শিলিগুড়ি ফন্টিয়ার-এর আইজি বন্দন সাক্সেনা।
ভারত-নেপাল সীমান্তের পানিট্যাঙ্কি এবং ভারত-ভুটান সীমান্তের জয়গাঁ ও চামুর্চি এলাকায় অটোমেটিক নম্বর প্লেট রিডার (এএনপিআর) যন্ত্র বসানো হবে। এই যন্ত্র রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনের নম্বর প্লেটের তথ্য স্বয়ংক্রিয় ভাবে সংরক্ষণ হবে। সাক্সেনা বলেন, 'সীমান্তে নিয়মিত নজরদারি চালানো হচ্ছে এবং সাম্প্রতিক সময়ে প্রতিবেশী দেশগুলিতে অস্থিরতার কারণে সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।' এর আগে অবৈধ অনুপ্রবেশের চেষ্টায় বাংলাদেশি নাগরিকদের ধরা হয়েছে। আবার বাংলাদেশ থেকে এসে চিকেনস নেক বা শিলিগুড়ি করিডর ব্যবহার করে নেপালে প্রবেশের চেষ্টা করতে গিয়ে এসএসবি'র হাতে ধরা পড়েছেন অনেকে।
যদিও 'সার' চালু হওয়ার পরে এ ধরনের কোনও ঘটনার তথ্য এখনও সামনে আসেনি বলে জানিয়েছেন আইজি। তবু নজরদারিতে ঢিলেমি দিতে রাজি নয় সশস্ত্র সীমা বল। যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য দিল্লি থেকে বিশেষ নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে বলে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। শিলিগুড়ি থেকে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটান, তিনটি দেশের সীমান্তই অল্প দূরত্বে অবস্থিত। এই সীমান্তগুলির বহু অংশে এখনও কাঁটাতারের বেড়া নেই। নেপাল ও ভুটান সীমান্তের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে এসএবি। আর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পাহারা দেয় বিএসএফ।
ভারতের সঙ্গে নেপালের সীমান্ত দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৩১ কিমি এবং ভুটানের ক্ষেত্রে প্রায় ২১৫ কিমি। এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে নেপাল সীমান্ত প্রায় ১০০ কিলোমিটার এবং ভুটান সীমান্ত প্রায় ১৮৩ কিলোমিটার বিস্তৃত। এ ছাড়াও বাংলাদেশ সীমান্ত রয়েছে কয়েকশো কিলোমিটার জুড়ে। এসবের বহু অংশ এখনও কাঁটাতারের বেড়াহীন অবস্থায় রয়েছে। এই উন্মুক্ত এলাকাগুলি দিয়ে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন নিরাপত্তা আধিকারিকরা। সেই কারণে নজরদারি আরও জোরদার করতে সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। শুধু এসএসবি নয়, বিএসএফ, সিআইএসএফ এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলিও উত্তরবঙ্গের সীমান্ত এলাকাগুলিতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করেছে। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোর মধ্যে নিয়মিত রিভিউ মিটিং হচ্ছে বলে জানান এসএসবির আইজি।