অস্ত্রত্যাগের প্রস্তাব, ৩ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি, অভিযান বন্ধের আর্জি মাওবাদীদের
বর্তমান | ২৬ নভেম্বর ২০২৫
নাগপুর: ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ। দেশকে মাওবাদী হিংসা মুক্ত করার ‘ডেডলাইন’ বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে খতম একের পর এক শীর্ষ মাওবাদী নেতা। ক’দিন আগেই গ্রেহাউন্ড বাহিনীর হানায় মৃত্যু হয়েছে মাওবাদীদের গেরিলা শীর্ষনেতা মাদভি হিদমারও। মধ্য ভারতে সংগঠনের কোমর ভেঙে গিয়েছে। এই অবস্থায় এবার আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের আর্জি জানিয়ে একযোগে তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিল নিষিদ্ধ সিপিআই (মাওবাদী) নেতৃত্ব। চিঠিটি লেখা হয়েছে মহারাষ্ট্র-মধ্যপ্রদেশ-ছত্তিশগড় (এমএমসি) স্পেশ্যাল জোনাল কমিটির তরফে। সেখানে মাওবাদী নেতৃত্বের তরফে অনুরোধ জানানো হয়েছে, ছত্রভঙ্গ সংগঠনের ক্যাডাররা যাতে অস্ত্রত্যাগ করে সরকারের পুনর্বাসন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার সুযোগ পান, সেজন্য ২০২৬ সালের ১৫ মার্চ পর্যন্ত নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান স্থগিত রাখা হোক। তবে এই চিঠি সত্ত্বেও মাওবাদীদের বিরুদ্ধে বাহিনীর অভিযান বন্ধ হচ্ছে না বলেই সূত্রের খবর। মাওবাদীদের সংগঠন যে বাস্তবে পুরোপুরি ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে, এই চিঠিকে তারই স্বীকারোক্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে। সূত্রের খবর, মাওবাদীদের চিঠিটি গত শনিবার বেশি রাতে মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে পৌঁছায় তিন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ, বিষ্ণুদেও সাঁই ও মোহন যাদবের দপ্তরে। দু’পাতার ওই চিঠিতে তারিখের জায়গায় ২২ নভেম্বরের উল্লেখ রয়েছে। তাতে সই রয়েছে জোনাল মুখপাত্র অনন্তের। সম্প্রতি সশস্ত্র সংগ্রাম থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সোনু দাদা ওরফে ভূপতি ও চন্দ্রন্না। চিঠিতে সেই সিদ্ধান্তকেই সিলমোহর দেওয়া হয়েছে। এই প্রথম মাওবাদীদের তরফে প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলা হয়েছে, চলতি বছরের পিএলজিএ সপ্তাহ উদ্যাপন ও সব ধরনের সামরিক পদক্ষেপ স্থগিত রাখা হচ্ছে। এই ৮০ দিন সব ধরনের প্ররোচনা বন্ধ রাখা হবে। দু’পক্ষের পারস্পরিক সংযমের মাধ্যমেই একমাত্র ইতিবাচক ফল মেলা সম্ভব। আত্মসমর্পণের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ আধিকারিকরা বলছেন, মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান কোনও অবস্থাতেই বন্ধ হবে না। এবিষয়ে এক প্রবীণ কর্তা বলেন, মহারাষ্ট্রের পুলিশ ও প্রশাসন আত্মসমর্পণ ও অস্ত্রত্যাগের যে কোনও পদক্ষেপকে স্বাগত জানাবে। যাঁরা আত্মসমর্পণ করতে চাইছেন, তাঁদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। তবে মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযান কোনওভাবেই বন্ধ হবে না।