• আজ সেই ২৬/১১, হানার ছক মেডিকেল মডিউলের
    বর্তমান | ২৬ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: মেডিকেল মডিউলের টার্গেট ছিল ২৬/১১ মুম্বই হামলার সেই ভয়ঙ্কর স্মৃতিকে ফিরিয়ে আনা। আর সেটা পুনরায় ঠিক সেই দিনেই হামলা করে। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের তৎপরতায় ফরিদাবাদে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার সেই প্ল্যান ভেস্তে দিয়েছে। দুই প্রধান সন্দেহভাজন ডাক্তারকে গ্রেপ্তার করে দেশজোড়া মেডিকেল টেরর মডিউলের পর্দাফাঁস করেছে। কিন্তু তদন্ত যত অগ্রসর হচ্ছে, তত বেশি সতর্কতা অবলম্বন করছে দিল্লি পুলিশ, এনআইএ এবং জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। তদন্তকারীদের আশঙ্কা, এভাবে একঝাঁক ডাক্তার পুলিশের জালে চলে আসায় তাদের ফেরার সঙ্গীরা কি প্রত্যাঘাতের ষড়যন্ত্র করেছে? অর্থাৎ আগের প্ল্যানই বজায় রেখে সিকিওরিটি এজেন্সিকে চ্যালেঞ্জ ছোঁড়া যে, মেডিকেল মডিউল খতম হয়নি! আজ ২৬ নভেম্বর। ফলে এই সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে না দিচ্ছে না প্রশাসন। দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ ও জম্মু-কাশ্মীরে জারি করা হয়েছে হা‌ই অ্যালার্ট। 

    মেডিকেল মডিউলের পরিকল্পনা ছিল ২৬ জানুয়ারি সাধারণতন্ত্র দিবসে দিল্লিতে বিস্ফোরণেরও। চক্রান্তের তালিকায় আরও যে কত শহরের নাম যুক্ত হয়েছিল, তার ইয়ত্তা নেই। সেই কারণেই সম্ভবত ২৯০০ কেজি বিস্ফোরকের উপকরণ মজুতের দরকার পড়ে। ডাঃ উমর নবির আই-২০ গাড়িটিকে একাধিক দিন দেখা গিয়েছিল দিল্লি-এক্সপ্রেসওয়েতে। অতএব প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক যে, বিস্ফোরকের একাংশ এই পথে মুম্বই নিয়ে যাওয়ার প্ল্যান ছিল কি না? শুধুই মেডিকেল মডিউলের নতুন ‘থ্রেট’ নয়, ২৬/১১-র আগেপরে পুনরায় আঘাত হানার প্ল্যান করছিল কুখ্যাত পাক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তোইবা ও জয়েশ-ই-মহম্মদও। গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের কোটলিতে অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে একটি গোপন বৈঠক হয়েছে। সেখানে জয়েশ ও লস্কর সদস্যরা ছিল। ছিল হিজবুল মুজাহিদিন সদস্যরাও। আর যোগ দিয়েছিল পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআ‌ইয়ের দু‌ই অফিসার। এই গোপন বৈঠকের প্রহরায় ছিল পাকিস্তানের বর্ডার অ্যাকশন টিম, স্পেশাল সার্ভিসের গ্রুপ। 

    এই পরিস্থিতিতে শ্রীনগর-জম্মু ন্যাশনাল হাইওয়ে এবং কাশ্মীর উপত্যকার প্রবেশদ্বার কাজিগুন্দ এন্ট্রি পয়েন্টে বিশেষ প্রহরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কারণ, এই দুই অঞ্চলে হামলার আশঙ্কা প্রবল। গত শনিবার শ্রীনগর থেকে তুফাইল নিয়াজ ভাটকে গ্রেফতার করে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিভ টিম। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, এই ব্যক্তির সঙ্গে মেডিকেল মডিউলের সম্পর্ক রয়েছে। নিয়াজ ভাটের মাধ্যমে অস্ত্রের জোগানের সন্ধান পেয়েছিল লালকেল্লার রাস্তায় বিস্ফোরণের মাস্টারমাইন্ড ডাঃ উমর নবি। উদ্বেগের অন্যতম কারণ, নওগাঁও থানায় মজুত রাখা উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরকের বিস্ফোরণে এই কাণ্ডের সমস্ত তদন্তকারীদেরই মৃত্যু হয়েছে। সুতরাং অন্য কোনও স্থান থেকে বিস্ফোরক উদ্ধার হলেও তার সঙ্গে ফরিদাবাদের বিস্ফোরকের চরিত্রগত ম্যাচিং করা সমস্যা হচ্ছে। কারণ, যাঁদের এই ধারণা ছিল, তাঁরা মৃত! 
  • Link to this news (বর্তমান)