পরিকাঠামোগত সমস্যায় ধুঁকছে মনোরোগ বিভাগ, এনবিএমসিতে পরিষেবা নিতে এসে দুর্ভোগ রোগীদের
বর্তমান | ২৬ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: পুরনো ভবনের সংস্কার, নতুন ভবন তৈরি, নির্মাণ কাজ লেগেই রয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কিন্তু উপেক্ষিত মনোরোগ বিভাগ। ঘরের অভাবে বিভাগীয় প্রধান সহ অন্যান্য অধ্যাপক চিকিৎসকদের একই ঘরে বসতে হয় টেবিল ভাগাভাগি করে। সেখানেই দেখতে হয় রোগী। জল খাওয়া বা শৌচালয়ের প্রয়োজন হলে ছুটতে হয় হস্টেলে বা হাসপাতালের কোনও বিভাগে।
চূড়ান্ত অব্যবস্থার মধ্যে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে হচ্ছে এখানকার চিকিৎসকদের। রোগীরাও নানান সমস্যার মধ্যে ডাক্তার দেখাচ্ছেন। বসার জায়গা নেই। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা খোলা আকাশের নীচে জানালার সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে ডাক্তার দেখাতে হয়। অথচ মনোরোগীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা থাকাটা জরুরি। মনোরোগীদের হাসপাতালের নিয়ে আসাটা পরিবারের লোকদের কাছে চ্যালেঞ্জ। কষ্ট করে এসে তাঁদের চূড়ান্ত হয়রানি মধ্যে পড়তে হচ্ছে।
মনোরোগ বিভাগে ঢোকার মুখে পুরনো বিল্ডিং ভাঙার আবর্জনার স্তূপ করে ফেলে রাখা হয়েছে। মনোরোগ বিভাগের গেট থেকে শুরু করে চারপাশেই গজিয়ে উঠেছে অসংখ্য দোকান। নানা ধরনের খাবার ও জিনিসপত্র রেখে সকাল থেকে বাজার বসে। ফলে রোগীর পরিবারের লোকদের এই ভিড়ের মধ্য দিয়ে কষ্ট করে যেতে হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এহেন উদাসীনতায় রোগীর পরিবারের লোকদের ক্ষোভ বাড়ছে।
বিভাগীয় প্রধান ডাঃ নির্মল বেরা এই সমস্যার কথা মেনে নিয়ে বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার ও ভবন সম্প্রসারণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আবেদন জানিয়ে এসেছি। সম্প্রতি কিছু অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। দোতালায় কিছু সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি, আগামী চার মাসের মধ্যে এই অবস্থার কিছুটা উন্নতি হবে।
মনোরোগ বিভাগের সামনে যেভাবে দোকান-বাজার গজিয়ে উঠেছে তা নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় রোগীর পরিবারের লোকেরা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, এই ভিড়, ভাঙাচোরা রাস্তা দিয়ে হুইল চেয়ারে রোগী আনতে নাজেহাল হতে হচ্ছে।
এখানে মানসিক রোগীদের পাশাপাশি মাদকাসক্তদেরও চিকিৎসা হয়। এই ভিড়ের মধ্য দিয়ে এ ধরনের রোগীদের নিয়ে আসা, নজরে রাখা অনেক সমস্যার। রয়েছে ঝুঁকিও। প্রশ্ন উঠেছে, এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের সামনে কেন এই ধরনের পরিবেশ হয়ে আছে।
হাসপাতালের অ্যাডিশনাল সুপার ডাঃ নন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে এ ধরনের দোকান সরিয়ে দেওয়ার। সেই মিটিংয়ে পুলিশ আধিকারিকরাও ছিলেন। এ ধরনের দোকান সরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা পুলিশকে জানাচ্ছি। হাসপাতালের নিজস্ব সিকিউরিটি গার্ড দিয়েও মাঝেমধ্যে সব দোকান সরিয়ে দেওয়া হয়। কিছুদিন পরে আবার বসে। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানাতে হবে। • মনোরোগ বিভাগের সামনে বসেছে দোকান। - নিজস্ব চিত্র।