• অবৈধ পুলকারের দায় কার? স্কুল-অভিভাবক চাপানউতোর
    বর্তমান | ২৬ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, উলুবেড়িয়া: পুলকার কি স্কুল কর্তৃপক্ষ ঠিক করে দিয়েছিল, নাকি অভিভাবকরা নিজেরাই ঠিক করেছিলেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। সোমবার উলুবেড়িয়ায় পুলকার দুর্ঘটনার পর স্কুলের তরফে জানানো হয়েছে, ওই পুলকারের সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের কোনও সম্পর্ক নেই। অভিভাবকরাই গাড়ি ঠিক করেছেন, তাঁরাই চালককে মাসে মাসে টাকা দেন। স্কুলের মালিকপক্ষের এই দাবি মানতে নারাজ অভিভাবকরা। তাঁদের বক্তব্য, সন্তানদের স্কুলে ভর্তির সময় কর্তৃপক্ষই আমাদের গাড়ি ঠিক করে দিয়েছিল। আমরা তো চালককে চিনতাম না। আগে অন্য চালক গাড়ি চালাত। গত এক বছর হল, সুমন্ত বাগ এই দায়িত্ব পালন করছে। ফলে পুলকারের দায়িত্ব স্কুল কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে। তাঁদের দাবি, এখন বিপদে পড়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ মিথ্যা কথা বলছে। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর ভাবনাচিন্তা করছেন অভিভাবকরা।

    মৃত পড়ুয়াদের অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রতিদিন যে পুলকারে করে ওরা স্কুলে যাতায়াত করত, ওইদিন সেটি আনেনি চালক। বদলে অন্য একটি গাড়ি নিয়ে এসেছিল। এই গাড়িটি আগে কখনও এই কাজে ব্যবহার হয়নি। এই গাড়ির না ছিল ফিটনেস সার্টিফিকেট (সিএফ), না ছিল বিমার কাগজ। গাড়িটি অবৈধ। দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা এই গাড়ি আদৌ চলাচলের যোগ্য কি না, তা যাচাই না করেই স্কুল থেকে পড়ুয়াদের আনতে গিয়েছিল চালক। 

    ধৃত পুলকারের চালক শ্রীমন্ত বাগ বলেন, নিয়মিত যে গাড়ি বাচ্চাদের আনতে যায়, সেটি অন্য স্কুলের পড়ুয়াদের পৌঁছে দিতে গিয়েছিল। ফিরতে দেরি দেখে এক বন্ধুর থেকে এই গাড়ি নিয়েই তিনি গিয়েছিলেন ছাত্র-ছাত্রীদের পৌঁছে দিতে। গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট বা বিমার মেয়াদ যে অনেক আগেই ফুরিয়ে গিয়েছিল, তা স্বীকার করে নিয়েছেন শ্রীমন্ত। মঙ্গলবার ধৃত চালককে উলুবেড়িয়া আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দেন। প্রসঙ্গত, এদিন আদালতে কোনও আইনজীবী অভিযুক্তের হয়ে দাঁড়াননি।  

    অন্যদিকে সোমবারের মর্মান্তিক ঘটনার পর মঙ্গলবার ছুটি ছিল স্কুল। এদিন সকালে স্কুলে গিয়ে দেখা গেল, তালা ঝুলছে গেটে। কবে খুলবে স্কুল? জিজ্ঞাসা করলে আশপাশের লোকজন কেউই মুখ খুলতে চাননি। এমনকি, স্কুলের গেটে ছুটি নিয়ে কোনও নোটিশও দেয়নি কর্তৃপক্ষ। স্কুলের মালিক শেখ শাহ আলমকে ফোন করলে তাঁর ফোন সুইচড অফ পাওয়া যায়। তবে এক ভিডিয়ো বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার কথা শোনার পরেই আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। এদিন দুপুরে স্কুলের শিক্ষিকরা অবশ্য মৃত পড়ুয়াদের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন।

    উলুবেড়িয়ার মহকুমা শাসক মানসকুমার মণ্ডল বলেন, পুলকার নিয়ে বুধবার বিভিন্ন বেসরকারি স্কুল কর্তৃপক্ষ, অভিভাবক, পুলিশ এবং পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিকদের বৈঠকে ডাকা হয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)