• বরানগর থানা: এএসআইয়ের শিকার বধূ
    বর্তমান | ২৬ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: রক্ষকই ভক্ষক! স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে থানায় গিয়েছিলেন গৃহবধূ। তদন্তের নামে সেই গৃহবধূকে ব্ল্যাকমেল করে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগ উঠল বরানগর থানায় একদা কর্তব্যরত এক এএসআইয়ের বিরুদ্ধে। ওই এএসআই এখন পুরুলিয়া পুলিশ লাইনে কর্মরত। শুধু তাই নয়, মহিলার নগ্ন ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া, মেয়েকে অপহরণ, স্বামীকে গাঁজা কেসে ফাঁসানোর হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে এই এএসআইয়ের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগকে কেন্দ্র করে তীব্র আলোড়ন শুরু হয়েছে। নির্যাতিতা মহিলা বিষয়টি নিয়ে রবিবার বরানগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীর নাম সঞ্জীব সেন। ওই পুলিশ কর্মী সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

    বরানগরের ওই গৃহবধূ অভিযোগ পত্রে জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের ১০ আগস্ট তিনি থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের মামলা করতে গিয়েছিলেন। সেই সময় ডিউটি অফিসার ছিলেন এএসআই সঞ্জীব সেন। তিনি তাঁর লিখিত অভিযোগ নেন। এরপর তদন্তের নামে একাধিকবার তাঁর বাড়ি আসেন। এরপর তাঁর ফোন নম্বর নিয়ে নিয়মিত কথা বলা শুরু করেন। কয়েকদিন পর থেকে রাতে অশ্লীল মেসেজ পাঠাতে শুরু করেন। মহিলার আরও অভিযোগ, একদিন ওই পুলিশ কর্মী তাঁর বাড়িতে আসেন। তাঁকে কোল্ডড্রিঙ্কস অফার করেন। তা খেয়ে মহিলা অচেতন হয়ে যান। পরে জ্ঞান ফিরে দেখেন,  বিবস্ত্র অবস্থায় রয়েছেন। এরপর সেই ছবি সমাজমাধ্যমে ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে এএসআই তাঁকে লাগাতার ধর্ষণ করেন বলে মহিলার অভিযোগ। একবার  নিউ বারাকপুরের এক হোটেলেও নিয়ে গিয়েও তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। তাঁকে বারাসতের এক শিল্প প্রতিষ্ঠানের ঘরে নিয়ে গিয়ে আটকেও রাখা হয়। মহিলা সন্তানসম্ভবা হলে, জোর করে তাঁর গর্ভপাত করানো হয়। ওই গৃহবধূর অভিযোগ, তাঁর মতোই বহু মহিলার সর্বনাশ করেছেন ওই এএসআই। 

    বরানগর থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪, ১২৩, ৩৫১ (২) ও ৭৯ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বারাকপুর কমিশনারেট সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে এর আগেও এমন অভিযোগ হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের পর পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে। এখন তিনি পুরুলিয়া জেলা পুলিশ লাইনে পোস্টিং রয়েছেন। এই বিষয়ে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মী সঞ্জীব সেন বলেন, এই ধরনের কোনও অভিযোগ হয়েছে, এই প্রথম শুনলাম। আমি বরানগর থানা থেকে বহু আগেই চলে এসেছি। এখন কেন এমন অভিযোগ করা হচ্ছে, জানি না। ভিত্তিহীন অভিযোগ। নিশ্চই পরিকল্পিত কোনও ষড়যন্ত্র রয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)