• মঙ্গলাহাটের ভিড়ে ব্যাগ হারাল ব্যাগ! আধার-ভোটার খুঁজে দিন, হাওড়া থানায় অঝোরে কান্না গৃহবধূর
    বর্তমান | ২৬ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: মঙ্গলবারে ব্যস্ত মঙ্গলাহাট। দুপুর আড়াইটে নাগাদ হাওড়া থানার উল্টোদিকের রাস্তায় ঠাসা ভিড়। কেনাকাটা সেরে বাড়ি ফিরছিলেন ডোমজুড়ের লক্ষণপুর বাগপাড়ার বাসিন্দা পূর্ণিমা বাগ। কয়েক পা হাঁটার পর হঠাৎ তাঁর হাড় হিম হয়ে গেল। দেখলেন টাকাপয়সা রাখার ছোট পার্সটি হাওয়া। টাকা শুধু নয়, ব্যাগে ছিল পরিবারের সদস্যদের ভোটার, আধার, রেশন, স্বাস্থ্যসাথী ইত্যাদি জরুরি সব নথি। সবে পরিবারের এসআইআর’য়ের জন্য ফর্ম ফিল আপ ইত্যাদি শেষ হয়েছে। সব খোয়া যাওয়ার আতঙ্কে আকাশ ভেঙে পড়ল মহিলার মাথায়।

    ব্যাগ হারানোর কথা টের পাওয়ার পর পূর্ণিমাদেবী ভিড়ের মধ্যে ছোটাছুটি করে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন এক আত্মীয়া। নাম, রীতা সাঁতরা। তিনি জানান, ব্যাগ খুঁজতে পাগলের মতো রাস্তায় ছুটছিলেন পূর্ণিমা। কোনওমতে ওকে টেনে থানায় নিয়ে আসি।’ থানার গেটের সামনে এসে পুরোপুরি ভেঙে পড়েন পূর্ণিমাদেবী। হাউ হাউ করে কাঁদছিলেন। ঠিক করে কথা বলতে পারছিলেন না। তাঁর কান্নার আওয়াজ শুনে দোতলা থেকে নেমে আসেন থানার আধিকারিকরা। জল খাইয়ে শান্ত কররেন। ধীরে ধীরে একটু সুস্থ হন পূর্ণিমাদেবী। 

    জানা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রে সোনার কাজ করেন পূর্ণিমাদেবীর স্বামী শ্যামল বাগ। বাড়িতে এসআইআর’য়ের নথি সামলে রাখার দায়িত্ব ছিল পূর্ণিমার উপর। এদিন সকালে সব নথিপত্র সহ ব্যাগটি সঙ্গে নিয়ে ওই আত্মীয়ার সঙ্গে মঙ্গলাহাটে কেনাকাটার জন্য আসেন। ব্যাগটি খোয়া যাওয়ার পর টাকার থেকেও বেশি নথিপত্র নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েন মহিলা। পূর্ণিমাদেবী বলেন, ‘টাকা গিয়েছে যাক। কিন্তু এত নথি আবার জোগাড় করব কোথা থেকে? ভোটার তালিকায় বদল হলে কি করব? আমার এত বড় সর্বনাশ হয়ে গেল।’ বলতে বলতে আবার হাউহাউ করে কেঁদে ওঠেন।

    পুলিশ পূর্ণিমাদেবীকে আশ্বস্ত করে জানায়, নথির ফটোকপি নিয়ে এলে সব আবার পাওয়া যাবে। ব্যাগ খোয়া যাওয়ার অভিযোগও দায়ের হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে বোঝানোর পর তিনি কিছুটা ধাতস্থ হন। থানার এক আধিকারিক বলেন, টাকা-পয়সা হারানোর থেকেও এখন ভোটার-আধারের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথি হারিয়ে গেলে মানুষ বেশি আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। মাঝে মধ্যেই প্যানিক হয়ে অভিযোগ জানাতে ছুটে আসছেন।
  • Link to this news (বর্তমান)