নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এসআইআর ফর্মপূরণের তথ্য ‘দিদির দূত’ অ্যাপে আপলোড করতেই হবে। কারণ, এই ‘ডকুমেন্টেশন’ ভবিষ্যতের আইনি লড়াইয়ের হাতিয়ার। তাই কোনও গাফিলতি নয়। মঙ্গলবার উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতায় কাউন্সিলার, বিধায়ক, সাংসদদের নিয়ে বৈঠকে এই বার্তাই দিল তৃণমূল নেতৃত্ব। তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এসআইআরের ফর্ম বিলির কাজ নিয়ে কলকাতায় রিভিউ বৈঠকের জন্য মেয়র তথা মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও অরূপ বিশ্বাসকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এদিন দক্ষিণ কলকাতার তেরাপন্থ ভবন ও উত্তরে মোহিত মঞ্চে তাঁদের ডাকা বৈঠকে নানা বার্তা উঠে এসেছে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি, সাংসদ মালা রায়, দেবাশিস কুমার, অতীন ঘোষরা। ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, আমাদের এসআইআর ফর্মের তথ্য চাই। নির্বাচন একটা যুদ্ধ। যুদ্ধে নামতে হলে যেমন গুলি, বারুদ, তলোয়ার লাগে, তেমনই নির্বাচনের যুদ্ধে লাগবে এই তথ্য। এই তথ্যই আমাদের হাতিয়ার। এই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে লড়াই করব। বৈধ ভোটারদের নাম বাদ পড়লে, আইনি লড়াইয়ে যাবে দল। তাই ‘দিদির দূত’ অ্যাপে ঠিকমতো আপলোড করতেই হবে। তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকে ভাল কাজ করছে। দলের সিনিয়র বিএলএ-২’রা এই কাজে নেমেছেন। অনেকে হয়ত স্মার্ট ফোনে ততটা সক্রিয় নন। তাঁদের পাশে থেকে দিদির দূত অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে দিতে হবে। এই কটা দিন এই কাজটা সিরিয়াসলি করতে হবে।
ফিরহাদ হাকিম ও অরূপ বিশ্বাস দু’জনেই দলের বৈঠকে পারফরম্যান্সের বিচারের কথা বলেছেন। তাঁদের কথায়, কাউন্সিলররা হচ্ছে আমাদের আসল মেরুদন্ড। তারাই ভোট করছে এবং তারাই উন্নয়ন করছে। তারাই এসআইআরের কাজ করছে। যে যে কাউন্সিলর, বিধায়ক দলের কাজ করবেন না, আগামীদিনে নিজেদের ক্ষতি করবেন। কয়েকজন কাউন্সিলার ও বিধায়কের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন দলের এই দুই শীর্ষ নেতা। তাঁদের বক্তব্য, কে কী ছিলেন, আর এখন কী হয়েছেন, সেটা সবাই জানে। তাই এই ক’দিন ভালো করে কাজ করলে, আগামী পাঁচ বছর ভালো থাকবেন। দল না থাকলে, কেউ থাকব না। সেটা মাথায় রাখুন। যাঁরা দলের কাজ এই সময় করবেন না, আগামী দিনে তাঁরা টিকিট পাবেন না। যে যে কর্মীরা কাজ করছে, তাঁদের সবদিক থেকে কাউন্সিলাররা সহযোগিতা করুন। শিবির ঘুরতে হবে। নিয়মিতি বিএলএ-২-র সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে।
সুব্রত বক্সি বলেন, আমাদের দল ক্যাডারভিত্তিক পার্টি নয়। অনেকেই নানা রকম কাজ করেন। আপনারা যাঁরা বিএলএ টু হিসেবে কাজ করছেন, সঙ্গে দু-চারজন বন্ধু-বান্ধব নিয়ে নিন। আপনি যেদিন থাকবেন না, সেদিন বন্ধুদেরকে দায়িত্ব দিয়ে দিন। কিন্তু কোথাও বুথ খালি রাখা যাবে না। বিএলওদের সঙ্গে সবাইকে থাকতেই হবে। সব তথ্য ডিজিটালি তুলে রাখুন। দলের কাছে তথ্য থাকলে, তার ভিত্তিতে ভবিষ্যতে নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই করা যাবে। কলকাতা উত্তরের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও কমিশনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বলেন, অনলাইন ডিজিটাইজড করার কাজে স্লো করছে কমিশন। ‘দিদির দূত’ অ্যাপের নানা প্রযুক্তিগত সমস্যা নিয়েও মুখর হন কাউন্সিলাররা। সেসব সমস্যার সমাধান করারও আশ্বাস দিয়েছে আইপ্যাক।