১০ বছর পর হচ্ছে ঠিকা-প্রজা সার্টিফিকেট বিলি, ভালো সাড়া নেই, ৬ মাসে জমা মাত্র ১৭০০ আবেদন
বর্তমান | ২৬ নভেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: প্রায় ১০ বছর পর ফের ঠিকা-প্রজার স্বীকৃতি অর্থাৎ ঠিকা-প্রজা সার্টিফিকেট দেওয়া শুরু করেছিল কলকাতা পুরসভা। ঠিক ছিল, গত ২ জুন থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি ছ’মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। আগামী ২ ডিসেম্বর সেই সময়সীমা শেষ হতে চলেছে। কিন্তু পুরসভা সূত্রে খবর, সেভাবে সাড়া মিলছে না। ঠিকা জমির প্রজাস্বত্ব চেয়ে ১৭০০-র কিছু বেশি আবেদন জমা পড়েছে। সমস্ত কাউন্সিলারকে নিয়ে মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বৈঠক, পাড়ায় পাড়ায় প্রচারের পরও ছবিটা বদল হয়নি। যদিও পুর-আধিকারিকদের একাংশ এক্ষেত্রে কাউন্সিলারদের একাংশের নিষ্ক্রিয়তাকেই দায়ী করছেন।
জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালের নভেম্বর মাস থেকে ঠিকা-প্রজা শংসাপত্র দেওয়া বন্ধ করেছিল রাজ্য। কিন্তু বছর বছর বাড়ছিল আবেদনের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে ঠিকা-প্রজার তালিকায় নতুন নাম তোলার জন্য রাজ্য মন্ত্রিসভা সম্মতি দেয়। এর জন্য বিশেষভাবে উদ্যোগী হয়েছিলেন মেয়র স্বয়ং। গত ২ জুন থেকে সেই ফর্ম বিলি শুরু হয়। কলকাতার ১ থেকে ১০০ নম্বর ওয়ার্ডের ঠিকা-প্রজারা আবেদন করতে পারছেন। এর জন্য পূরণ করতে হচ্ছে একটি আবেদনপত্র। তার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় নথিপত্র জমা করতে হচ্ছে। সব খতিয়ে দেখার পর দেওয়া হচ্ছে সার্টিফিকেট। এক অফিসার বলেন, ‘এটাকে সরকারি পরিভাষায় রিটার্ন বলা হয়। এতদিন তাঁরা ঠিকা জমিতে থাকলেও কোনও আইনি স্বীকৃতি ছিল না। বিভিন্ন ধরনের সরকারি পরিষেবা পেতে গেলে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। এবার রিটার্ন জমা করে আবেদনকারীরা ঠিকা-প্রজা শংসাপত্র হাতে পাচ্ছেন। এর ভিত্তিতেই তাঁরা সরকারকে গ্রাউন্ড রেন্ট বা জমির ভাড়া দেবেন। বাড়ির মিউটেশন, অ্যাসেসমেন্ট করাতে পারবেন। প্রয়োজনে পুরোনো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি করার অনুমোদনও পাবেন।’
প্রসঙ্গত, ঠিকা-প্রজার শংসাপত্র পেতে যাতে সংশ্লিষ্ট সবাই আগ্রহ দেখান, তার জন্য টাউন হলে কাউন্সিলারদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন মেয়র। এলাকায় লিফলেট বিলি করতে বলা হয়েছিল। তারপরও সাড়া মেলেনি সেভাবে। এক অফিসার বলেন, ‘আমরা প্রথমে ১০টি বরো অফিসে এর জন্য ক্যাম্প খুলেছিলাম। পরে সাড়া না পেয়ে ক্যাম্পের সংখ্যা কমিয়ে চারটি করা হয়। ট্যাংরা, কাশীপুর, বেলভেডিয়ার রোড ও নারকেলডাঙায় ঠিকার জোনাল অফিসে শিবির চলে। অফিসাররা তৃণমূল স্তরে নেমে কাজ করেছেন। পাড়ায় পাড়ায় প্রচার হয়েছে। কিন্তু, তাতেও এত কম সংখ্যক আবেদন এসেছে। আমাদের ধারণা ছিল, অন্তত ১০ হাজার আবেদন আসবে। কিন্তু সেটা এখনও হয়নি। এই সময়সীমা শেষ হয়ে গেলে আবার সুযোগ কবে আসবে, বলা মুশকিল।’ ঠিকা-প্রজার সার্টিফিকেট হাতে থাকলে নাগরিকরা যেমন উপকৃত হবেন, তেমনই জমির ভাড়া সহ মিউটেশন, অ্যাসেসমেন্ট বাবদ পুরসভার আয়ও বাড়বে বলে আশাবাদী আধিকারিকরা।