সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত-পাক সংঘাত ৬ মাস পেরিয়েছে। যদিও তার বীরগাথা আজও বর্তমান। এবার সামনে এল তেমনই এক বীরত্বের গল্প। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অপরেশন চলাকালীন কাশ্মীরের উরিতে এক জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ধ্বংস করার ছক কষেছিল ইসলামাবাদ। তবে তাদের সে পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছেন ১৯ জন সিআইএসএফ জওয়ান। এই সাহসিকতার জন্য ওই জওয়ানদের পুরস্কৃত করল সিআইএসএফ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বীরগাথাও তুলে ধরা হয়েছে সিআইএসএফ-এর তরফে।
বারামুলার বিতস্তা নদীর উপর নির্মিত উরির এই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। ৬-৭মে পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করতে অপারেশন সিঁদুর অভিযান শুরু করেছিল ভারত। পাল্টা জবাবে ভারতকে লক্ষ্য করে এলপাথাড়ি ড্রোন ও গোলাবর্ষণ করে পাক সেনা। এই হামলার নিশানায় ছিল জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটিও। যার নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন কমান্ড্যান্ট রবি যাদবের নেতৃত্বে ১৮ জন সিআইএসএফ জওয়ান। পাকিস্তানের ড্রোন হামলা রুখে দেওয়া তো বটেই, ওই অঞ্চলের প্রতিটি বাড়ি থেকে বাসিন্দাদের বের করে এনে নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়। ২৫০ জনের বেশি গ্রামবাসীর প্রাণরক্ষা হয় সিআইএসএফ জওয়ানদের উদ্যোগে। নিভিয়ে দেওয়া হয় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র-সহ গ্রামের সমস্ত আলো।
প্রসঙ্গত, বিমানবন্দর, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্য-সহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলি পাহারার দায়িত্বে থাকেন সিআইএসএফ জওয়ানেরা। তবে ভারত-পাক যুদ্ধের সময় এই জওয়ানদের উপস্থিত বুদ্ধি ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও গ্রামবাসীদের প্রাণরক্ষার এই সাহসী উদ্যোগের প্রশংসা করা হয়েছে সিআইএসএফের তরফে। মঙ্গলবার দিল্লিতে সিআইএসএফের এক কর্মসূচিতে এই ১৯ জওয়ানের বীরত্বের কথা তুলে ধরে তাঁদের পুরস্কৃত করা হয়। এক্স হ্যান্ডেলে এই বিষয়ে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, ‘সীমান্তে গোলাবর্ষণ চলাকালীন এই জওয়ানরা অসামান্য সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁরা শুধুমাত্র দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপত্যকে রক্ষা করেননি, প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ২৫০ জন গ্রামবাসীকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যান।’
উল্লেখ্য, পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ মৃত্যুর বদলা নিতে ৬-৭ মে গভীর রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু ভারতীয় সেনা। গভীর রাতে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯ জায়গায় জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয় ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র। এই হামলায় বাহওয়ালপুরে জইশ-ই-মহম্মদ, মুরাক্কায় লস্কর-ই-তৈবা ও হিজবুল মুজাহিদিনর সদর দপ্তর গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। গোটা অপারেশনের নজরদারিতে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২৫ মিনিট ধরে পাকিস্তানে হামলা চালায় ভারত। এরপর বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়, পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরে ৯টি জায়গায় জঙ্গি পরিকাঠামো লক্ষ্য করে ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ করা হয়েছে। যে সব জায়গায় বসে ভারতে সন্ত্রাসবাদী হানার পরিকল্পনা হয়েছিল এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, সেখানেই ভারত আঘাত হেনেছে।