• বাড়িতে বিয়ে চলছে, বৃদ্ধাশ্রমে মৃত মায়ের দেহ চারদিন ফ্রিজারে রাখতে বললেন ছেলে
    প্রতিদিন | ২৬ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মানবিকতা হল মানব সভ্যতার অন্যতম শর্ত। এই ভাবনাকে চুরমার করে দিল উত্তরপ্রদেশের জৌনুপরেরর একটি ঘটনা। সেখানে বৃদ্ধাশ্রমে মৃত মায়ের দেহ নিতে অস্বীকার করলেন ‘গুণধর’ ছেলে, যেহেতু বাড়িতে বিবাহ অনুষ্ঠান চলছে। এমনকী বৃদ্ধাশ্রম কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করলে মৃতার ছেলে পরামর্শ দেন, চারদিন দেহ ফ্রিজারে রেখে দিন। বর্বরতা এখানেই ফুরোয়নি। আত্মীয়াদের শেষ দেখার অনুরোধে বৃদ্ধার মৃতদেহ গ্রামে আনলেও ছেলের সিদ্ধান্তে কবর দেওয়া হয় মাকে। ঠিক করা হয় বিবাহ অনুষ্ঠান শেষ হলে দেহকাজ সম্পন্ন হবে।

    মৃতার নাম শোভা দেবী। স্বামী ভুয়াল গুপ্তা। গোরখপুরের বাসিন্দা। দম্পতীর তিন ছেলে, তিন মেয়ে। মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, পারিবারিক অশান্তির কারণে বাবা-মাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন বড় ছেলে। এরপর আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ভুয়াল। স্থানীয়রা তাঁকে আটকান। এরপর স্ত্রীকে নিয়ে প্রথমে অযোধ্যা, পরে মথুরায় চলে যান তিনি। সেখানে একটি বৃদ্ধাশ্রমে থাকছিলেন দম্পতি। বেশ কিছু দিন হল দু’জনেই গুরুতর অসুস্থ। সম্প্রতি চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে মৃত্যু হয় বৃদ্ধার। এরপরেই শুরু ‘নাটক’।

    বৃদ্ধাশ্রমের তরফে মায়ের মৃত্যুসংবাদ জানিয়ে দম্পতির ছোট ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বিষয়টি সে জানায় বড়দাকে। যদিও দম্পতির বড় ছেলে বৃদ্ধশ্রম কর্তৃপক্ষকে জানায়, তাঁর একমাত্র ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান রয়েছে। তাই এখনই মরদেহ বাড়িতে আনবেন না। আগামী চারদিন ফ্রিজারে দেহ রেখে দেওয়া হোক। বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ হলে দেহ বাড়িতে আনবেন। কিন্তু শোভাদেবীর মৃত্যুর খবর পেয়ে শেষবারের জন্য তাঁকে দেখতে চান আত্মীয়রা। তখন দেহটি গোরখপুরে পাঠানো হয়।

    ফের চাঞ্চল্যকর মোড় নেয় ঘটনা। কারণ মায়ের শেষকৃত্যের বদলে দেহ কবর দেন বড় ছেলে। তিনি জানান, চারদিন পর দেহ কবর থেকে তুলে দাহ করা হবে। ছেলেদের এহেন কীর্তিতে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বৃদ্ধাশ্রমের কর্মীরা। স্থানীয়রাও তুমুল নিন্দা করছেন। নিজের ছেলে মায়ের মৃত্যুতে শোকার্ত নন, এমনকী দেহ নিতেও অস্বীকার করছেন, এমন ঘটনায় হতভম্ব সকলে।
  • Link to this news (প্রতিদিন)