স্বাস্থ্যপরীক্ষা না করে ভ্রমণের অনুমতি? সান্দাকফুতে বারবার পর্যটকের মৃত্যুতে প্রশ্ন
প্রতিদিন | ২৬ নভেম্বর ২০২৫
স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি: সান্দাকফু (Sandakphu) ভ্রমণে গিয়ে একের পর এক পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে বিভিন্ন মহলে। প্রশ্ন উঠেছে কেন স্বাস্থ্যপরীক্ষা না করে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১২ হাজার ফুট উঁচু পশ্চিমবঙ্গ-নেপাল সীমান্তে দার্জিলিং জেলার সিঙ্গালিলা শৈলশিরায় অবস্থিত ওই শৃঙ্গে ওঠার অনুমতি দিয়ে পর্যটকদের বিপদে ফেলা হচ্ছে! এমনিতেই উচ্চতার জন্য সেখানে অক্সিজেনের অভাববোধ হয়ে থাকে। অথচ অসুস্থ হলে চিকিৎসার ব্যবস্থাও নেই। অসুস্থ পর্যটককে নিচে নামিয়ে আনতে গিয়ে দুর্ঘটনা বেড়েই চলেছে।
দার্জিলিংয়ের মহকুমা শাসক রিচার্ড লেপচা অবশ্য বলেন, “সান্দাকফুতে স্বাস্থ্য পরিষেবা পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই কাজ সম্পূর্ণ হলে বিধিনিষেধগুলো কড়া ভাবে মেনে চলা সম্ভব হবে। এখন সাধারণভাবে পর্যটকদের সান্দাকফুতে যাওয়ার পরিকল্পনা থাকলে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নিতে পরামর্শ দেওয়া হয়।” কিন্তু পরামর্শ মেনে চলার বাধ্যবাধকতা যে একদম নেই সোমবারের ঘটনায় আরও স্পষ্ট হয়েছে। এদিন সান্দাকফুতে পৌঁছে অক্সিজেনের অভাবে শ্বাসকষ্টে প্রাণ হারান কলকাতার যাদবপুরের বাসিন্দা ৭২ বছরের পর্যটক। প্রশ্ন উঠেছে বৃদ্ধা সান্দাকফুতে ওঠার অনুমতি পেলেন কেমন করে? কেন বয়সজনিত কারণেই তাকে আটকে দেওয়া হয়নি? জিটিএ কর্তারা ওই প্রশ্ন এড়িয়ে গিয়েছেন। এর আগেও একাধিক পর্যটক সান্দাকফুতে গিয়ে অসুস্থ হয়েছেন। মৃত্যুও হয়েছে।
চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল পূর্ব বর্ধমানের বাসিন্দা রাজ নারায়ণ দে নামে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়। তার আগে উত্তর দিনাজপুরের এক পর্যটকের মৃত্যু হয়। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে ইজরায়েলের এক পর্যটক মানেভঞ্জন থেকে সান্দাকফুতে ট্রেকিং করতে গেলে রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর সান্দাকফুতে বেড়াতে গিয়ে প্রাণ হারান কলকাতার ভবানীপুরের বাসিন্দা এক পর্যটক। ওই বছরের ৪ ডিসেম্বর সান্দাকফু বেড়াতে গিয়ে মৃত্যু হয় উত্তর ২৪ পরগনার দমদমের অশোকনগরের মুকুন্দ দাস রোডের বাসিন্দা আরও এক পর্যটকের। পাহাড়ে বেড়াতে এসে এই মৃত্যুমিছিল কবে থামবে তা নিয়েই যে শুধু প্রশ্ন উঠেছে সেটাই নয়। জিটিএ-এর দায়িত্ব এবং নজরদারিও রীতিমতো প্রশ্নের মুখে। অভিযোগ উঠেছে, সান্দাকফুতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির আশ্বাস দেওয়া হলেও আজও সেটা হয়নি। এছাড়াও জিটিএ-র কোনও নজরদারি নেই। কোন পর্যটকরা সান্দাকফুর মতো উঁচু এলাকায় যেতে পারবেন সেই বিষয়ে আজও কড়া ব্যবস্থা নিতে পারেনি জিটিএ। যে কারণে মৃত্যু ঘটেই চলেছে।