গঙ্গাসাগর মেলায় নিখোঁজ! ২০ বছর পর বাংলাদেশে খোঁজ মিলল মধ্যপ্রদেশের বৃদ্ধার
প্রতিদিন | ২৬ নভেম্বর ২০২৫
সুরজিত দেব, ডায়মন্ডহারবার: গঙ্গাসাগর মেলায় গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন এক বৃদ্ধা। তিনি মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) বাসিন্দা। মাঝে পেরিয়ে গিয়েছে ২০টা বছর। অবশেষে সেই বৃদ্ধার খোঁজ মিলল বাংলাদেশে। ভিডিওকলে ওই বৃদ্ধাকে দেখে চিনতে পেরেছেন তাঁর ছেলে। মাকে দ্রুত বাড়িতে ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ হাই কমিশন, মধ্যপ্রদেশ রাজ্য সরকার ও ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযাগ করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধা মানসিক ভারসাম্যহীন। দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণ ক্ষমতাও তিনি হারিয়েছেন বলে খবর। সত্তরোর্ধ ওই বৃদ্ধার নাম রাতিয়া আহিরওয়ার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার গঙ্গাসাগরে প্রতি বছর মেলা হয়। সংক্রান্তির দিন হয় পূণ্যস্নান। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লক্ষ লক্ষ পূণ্যার্থী হাজির হন সাগরে। মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) সাগর জেলার বান্দা থানা এলাকায় বাড়ি রাতিয়ার। ২০ বছর আগে তিনি স্বামী ও গ্রামের পরিচিতদের সঙ্গে গঙ্গাসাগরে গিয়েছিলেন। কিন্তু পরিবারের সঙ্গে তিনি বিছিন্ন হয়ে যান তিনি।
রাতিয়া আহিরওয়ার ধর্মপ্রাণ মানুষ। তাঁদের রীতিতে স্বামীর নাম মুখে আনতেও নেই বলে খবর। সেজন্য তিনি কাউকেই স্বামীর নাম, পরিচয় বলতে পারেননি! হারিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। পরিবারের লোকজনও তাঁর খোঁজ পাননি। মেলা শেষেও বিভিন্ন জায়গায় পরিবারের লোকজন তাঁর খোঁজ করেছিলেন। কিন্তু কোনও সন্ধানই মেলেনি! মধ্যপ্রদেশের বান্দা থানায় নিখোঁজের অভিযোগ করে পরিবার। কিন্তু সন্ধান মেলেনি।
দীর্ঘ দুই দশক পরে ওই বৃদ্ধার সন্ধান মিলল। ওই বৃদ্ধার খোঁজ মিলেছে বাংলাদেশে। তিনি কীভাবে বাংলাদেশে গেলেন সেই প্রশ্ন উঠেছে। অনুমান করা হচ্ছে, গঙ্গাসাগরে আসা কোনও তীর্থযাত্রী দলের সঙ্গেই ভুল করে তিনি চলে গিয়েছিলেন বাংলাদেশে। হ্যাম রেডিওর সৌজন্যে তাঁর খোঁজ মিলেছে বলে খবর। পরিবার-পরিজনদের ছবি ভিডিওকলে দেখানোর চেষ্টা হলেও তা ব্যর্থ হয়। কারণ, বৃদ্ধা হারিয়ে ফেলেছেন তাঁর শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি। শেষপর্যন্ত বৃদ্ধার ছেলে রাজেশ ছবি দেখে মাকে চিনতে পারেন। ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করা হয়েছে বাংলাদেশ হাইকমিশন, মধ্যপ্রদেশ সরকার ও ভারত সরকারের সঙ্গে। সকলের সহযোগিতায় শীঘ্রই মাকে গ্রামের বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বৃদ্ধার পুত্র। মাকে ফিরে পাওয়া যাবে, আশাই করেননি তিনি। পুরনো স্মৃতি মনে করতেই কেঁদে ফেলছেন তিনি।