এসআইআর-এর এনুমারেশন পর্বে (ফর্ম বিলি এবং তা পূরণ করা) অনলাইন ব্যবস্থায় আধার বাধ্যতামূলক করেছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এ বার পরবর্তী যে কোনও অনলাইন কাজের ক্ষেত্রে সেই আধার কার্ডকেই বাধ্যতামূলক করা হল। বিরোধীদের অভিযোগ, গোড়ায় আধার কার্ডকে মান্যতা দিতেই চায়নি কমিশন। কিন্তু এখন প্রতিটি পর্যায়ে তা বাধ্যতামূলক করার যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। তবে কমিশনের যুক্তি, যোগ্য আবেদনকারীদেরই অনলাইন পরিষেবায় উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। তাই আধারের মাধ্যমে ই-সই (ই-সাইন) পদ্ধতি কার্যকর রয়েছে। তবে পরবর্তী কোনও আবেদনে আধারের মাধ্যমে ই-সই হলেও ভিন্ন নথিও দিতে হবে।
সূত্রের খবর, সব জেলাশাসককে বলে দেওয়া হয়েছে যে নতুন নাম তোলা (ফর্ম-৬), মৃতের নাম বাদ দেওয়া (ফর্ম-৭) এবং ভোটার তথ্যে সংশোধন (ফর্ম-৮) অনলাইনে করতে হলে আধার বাধ্যতামূলকই থাকবে। এখন এনুমারেশন ফর্ম সরাসরি বা অনলাইনে জমা দেওয়া যাচ্ছে। কাগজের ফর্মে আধার নম্বর দেওয়া ভোটারের ইচ্ছের উপরে নির্ভরশীল। তবে অনলাইনে তা করতে হলে প্রথমে ফোন নম্বর সংযুক্ত করতে হচ্ছে। পরবর্তী পর্যায়ে আধারের সঙ্গে ভোটার কার্ডের নামে মিল থাকলে তবেই অনলাইনে এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করা যাচ্ছে। এখন শুধু ফর্ম জমা করা ছাড়া নতুন নাম তোলা, সংশোধনের কাজ করা যাচ্ছে না। ৯ ডিসেম্বর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর থেকে তা করা যাবে। মনে করা হচ্ছে, সেই পর্বের জন্যও আধারকে বাধ্যতামূলক করা হল। অর্থাৎ, তখনও কেউ অনলাইন ব্যবস্থায় নতুন নাম তুলতে বা সংশোধন করতে হলে আধারের মাধ্যমে আগে ই-সই করতে হবে।
প্রসঙ্গত, বিহারের এসআইআর পর্বে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া মামলায় আধার কার্ডকে গ্রাহ্য করতে চায়নি কমিশন। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরে কমিশন তা নথির তালিকাভুক্ত করে। অবশ্য সুপ্রিম কোর্টের ওই রায়কে উল্লেখ করে তারা জানিয়ে দেয়, আধার শুধু সচিত্র পরিচয়পত্র হিসেবেই গ্রাহ্য হবে। তা বৈধ কি না, তা বোঝার জন্য দিতে হবে তালিকাভুক্ত অন্য কোনও নথি। এখন দেখা যাচ্ছে, অনলাইনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আধারকে মানতে হচ্ছে কমিশনকে। প্রশ্ন উঠছে, বারে বারে নতুন নতুন বিধি কি ভোটারদের সমস্যা বাড়াবে না?
কমিশনের বক্তব্য, প্রক্রিয়ার এক-একটি পর্বের জন্য আগেভাগে বিধি জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ রাজ্যে ভোটার তালিকাভুক্ত হওয়ার আবেদনের ক্ষেত্রে নানা অসাধু হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। এমনকি দেখা গিয়েছে যে, কোনও ভোটারের নাম কাটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে আধিকারিকের একাংশের ভূমিকাও নজরে এসেছিল কমিশনের। অন্তত চার আধিকারিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ হয়েছে। তাই অনলাইন ব্যবস্থায় আধারের মাধ্যমে ই-সই নেওয়া হচ্ছে। কারণ, আধারের সঙ্গে ভোটারের ফোন নম্বর সংযুক্ত থাকে। তাই বৈধ ভোটারই সেই কাজ করছেন বলে ধরে নেওয়া হবে। তবে নতুন নাম তোলা, বাদ দেওয়া (মৃতদের ক্ষেত্রে) বা সংশোধনের ক্ষেত্রে অন্য নথিও পেশ করতে হবে।