আট কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন রূপে সেজে উঠছে সিরিটি শ্মশান, সপার্ষদ পরিদর্শন মেয়র ফিরহাদ হাকিমের
আনন্দবাজার | ২৬ নভেম্বর ২০২৫
নতুন রূপে গড়ে উঠছে সিরিটি মহাশ্মশান। কলকাতা পুরসভা প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে শ্মশান সংস্কারের কাজ হাতে নিয়েছে। বুধবার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ,মেয়র পারিষদ তারক সিংহ, সন্দীপ বক্সী এবং ১১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কৃষ্ণা সিংহ-সহ পুরসভার একাধিক আধিকারিক এই কাজের অগ্রগতি ঘুরে দেখেন।
পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সিরিটি মহাশ্মশানের নতুন অবকাঠামোতে থাকছে চারটি অত্যাধুনিক বৈদ্যুতিক চুল্লি। পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব কাঠের চুল্লিও রাখা হয়েছে, যাতে ইচ্ছুক পরিবারগুলি প্রথাগত পদ্ধতিতেই পরিজনের দাহসংস্কার সম্পন্ন করতে পারে। শ্মশানবন্ধু তথা আত্মীয়দের থাকার জন্য শীতাতপনিয়ন্ত্রিত একটি প্রতীক্ষালয় তৈরি করা হয়েছে— যার মাধ্যমে পরিজনদের মর্যাদাপূর্ণ ও আরামদায়ক পরিবেশে অপেক্ষার সুযোগ মিলবে। শ্মশানচত্বরকে আরও শান্ত ও ধর্মীয় আবহ দিতে তৈরি হয়েছে একটি মন্দির এবং তার সঙ্গেই গঙ্গাজলের পুকুর। এখানে অস্থি বিসর্জনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পাশাপাশি কাছেই গড়ে উঠছে একটি ছোট পার্ক, যেখানে মৃতের পরিজনেরা কিছু ক্ষণ নিরিবিলিতে বসতে পারবেন।
সিরিটি মহাশ্মশানের সংস্কারের সূত্রপাত ২০১৩ সালে। সেই বছরের মে মাসে চলচ্চিত্র পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষের শেষযাত্রায় সিরিটি গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শ্মশানের দুরবস্থা দেখেন। সে দিনই শ্মশান আধুনিকীকরণের নির্দেশ দেন তিনি। এর পরই নড়েচড়ে বসে পুরসভা। রাজ্য সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় শ্মশানের পাশের প্রায় ১৪ কাঠা জমি দু’কোটি টাকায় অধিগ্রহণ করা হয়। ধাপে ধাপে শুরু হয় আধুনিকীকরণ প্রকল্প।
বুধবার পরিদর্শনে গিয়ে মেয়র ফিরহাদ জানান, সিরিটি মহাশ্মশানের কাজ দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে এবং সামগ্রিক অগ্রগতিতে তিনি সন্তুষ্ট। তাঁর আশা, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই সম্পূর্ণ নতুন রূপে এই মহাশ্মশান উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত হবে। তিনি বলেন, “শ্মশান মানেই যেন অগোছালো বা অস্বস্তিকর পরিবেশ— এই ধারণা বদলে দেওয়াই লক্ষ্য। মানুষের শেষযাত্রা মর্যাদার সঙ্গে যেন সম্পন্ন হয়, সেই দিকেই নজর দিচ্ছি আমরা।” উদ্যোগ, ব্যয়, পরিকল্পনা— সব মিলিয়ে সিরিটি মহাশ্মশান আগামী দিনে কলকাতার অন্যতম আধুনিক ও মানবিক কাঠামো হিসাবে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে চলেছে।