বিএলওদের উপর কমিশনের ‘অমানবিক’ আচরণ নিয়ে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর
দৈনিক স্টেটসম্যান | ২৭ নভেম্বর ২০২৫
আজ সংবিধান দিবসে রেড রোডে ডা. বিআর আম্বেদকরের মূর্তিতে মাল্যদান করে বেরিয়েই বিজেপি ও কমিশনের বিরুদ্ধে ফের সরব হলেন মমতা। এসআইআর পর্বে বিএলওদের দুর্দশা নিয়ে ফের আক্রমণ শানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এভাবে বিএলও-দের পাশে দাঁড়িয়ে একদিকে নির্বাচন কমিশন, অন্যদিকে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার— দুই পক্ষকেই সরাসরি প্রশ্নবিদ্ধ করলেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, ‘বিএলওদের ন্যায্য দাবি মানতে ৪৮ ঘণ্টা কেন অপেক্ষা করাল কমিশন? এতটাই কি অমানবিক হয়ে উঠেছে তারা?’
এ ব্যাপারে তথ্যের পরিসংখ্যান তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, বাংলা সহ বহু রাজ্যে একের পর এক বিএলওর মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের দাবি ন্যায্য এবং সংযত। তারপরেও কেন কলকাতায় কমিশনের দপ্তরের সামনে ৪৮ ঘণ্টা বসে থাকতে হল?’
আগের দিন ঠাকুরনগর থেকে ফেরার পথে বিক্ষোভকারীদের দেখে থমকে যাওয়া তাঁর কনভয়ের কথাও তিনি তুলে ধরেন। বলেন, ‘মানুষ কথা বলতে চাইছিলেন। আমি নেমে শুনলাম, সঙ্গে সঙ্গে যা যা দরকার করে দিলাম। তাহলে বিএলওদের কথা শুনতে এত দেরি কেন?’
রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা ভোটের মুখে দ্রুতগতিতে চালানো এসআইআর নিয়েও ক্ষোভ উগরে দেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, ‘তিন বছরের কাজ দু’মাসে সারতে চাইছে কমিশন।’ এরপরেই নাগরিকত্ব প্রমাণের প্রশ্নে কেন্দ্রীয় নীতিকে সরাসরি আঘাত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার এত বছর পরে নাগরিকত্বের প্রমাণ চাইছে রাষ্ট্র। আমরা স্তম্ভিত, দুঃখিত, মর্মাহত। দেশে গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা আজ বিপন্ন।’ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তাঁর সোজাসাপটা অভিযোগ, ‘দেশে নিরপেক্ষতা নেই। একপক্ষ চলছে। বাংলা ভারতের অংশ— এটা কেন্দ্র ভুলে গেছে।’
এই অবস্থায় এসআইআরকে কেন্দ্র করে বিএলও সংগঠনের ক্ষোভ, মাঠে নেমে আন্দোলন এবং কমিশনের নীরবতা, সব মিলিয়ে রাজনৈতিক অগ্নিপরীক্ষার মুখে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট বার্তা— ‘বিএলওদের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার, আরও দাঁড়াবে।’