সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অযোধ্যায় রামমন্দিরের চূড়ায় মঙ্গলবার ‘ধর্মধ্বজ’ উত্তোলন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যার পর আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ভারতের সমালোচনায় সরব হয় পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক। বুধবার পালটা দিল নয়াদিল্লি। এদিন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল মন্তব্য করেন, সংখ্যালঘুদের উপর দমন-পীড়ন চালানো ধর্মান্ধ পাকিস্তানের অন্যকে জ্ঞান দেওয়া সাজে না। ঠিক কী বলেছেন রণধীর?
মঙ্গলবার অযোধ্যায় শ্রীরাম জন্মভূমি মন্দিরের চূড়ায় ‘ধর্মধ্বজ’ উত্তোলনে মোদির সঙ্গী ছিলেন আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত, উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল আনন্দীবেন প্যাটেল এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। মোদির এই ‘ধর্মধ্বজ’ উত্তোলন কর্মসূচির সমালোচনা করে একটি বিবৃতি দেয় পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রক। সেখানে এই ঘটনাকে ‘ইসলামফোবিয়া’ এবং ‘ঐতিহ্যের অপবিত্রতা’ ইত্যাদি বলা হয়। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের প্রসঙ্গ টেনে ভারতের সমলোচনা করে ইসলামাবাদ।
ইসলামাবাদের মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেন জয়সওয়াল। তিনি বলেন, “আমরা (পাকিস্তানের) মন্তব্যগুলি দেখেছি। তাদের এমন বক্তব্য খণ্ডন করছি। সংখ্যালঘুদের উপর দমন-পীড়ন চালানো ধর্মান্ধ পাকিস্তানের অন্যকে জ্ঞান দেওয়ার নৈতিক অধিকারই নেই।” কেবল ধর্মধ্বজ উত্তোলন নয়, রামমন্দিরে নির্মাণের অনুমতি দেওয়া নিয়েও সরকার এবং ভারতীয় বিচার ব্যবস্থাকে একহাত নিয়েছে পাকিস্তান। ওই ঘটনাকে “সংখ্যালঘুদের প্রতি ভারতীয় রাষ্ট্রের বৈষম্যমূলক আচরণ” বলেছে ইসলামাবাদ। পালটা পাকিস্তানকে নিজের চড়কায় তেল দিতে বলেছেন জয়সওয়াল। তিনি মন্তব্য করেন, নিজের দেশ নিয়ে ভাবা উচিত পাকিস্তানের। মানবাধিকার ভঙ্গের ভয়াবহ রেকর্ডের দিকে মন দিক তারা।
প্রসঙ্গত, বিশেষ পতাকা উত্তোলনের পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই ধর্মধ্বজ শুধু একটি পতাকা নয়। এটি ভারতীয় সভ্যতার পুনরুজ্জীবনের প্রতীক। গেরুয়া রং সূর্যবংশের প্রতীক, ‘ওম’ শব্দ এবং কোভিডারা বৃক্ষ রামরাজত্বের মহিমাকে মূর্ত করে তুলেছে।” তিনি বলেন, এই পতাকা আগামী হাজার বছর ধরে ভগবান রামের মূল্যবোধকে ভারতীয়দের কাছে জানান দিয়ে যাবে।
২২ ফুট বাই ১১ ফুট আকারের এই গেরুয়া পতাকাটি প্যারাশুট-গ্রেডের কাপড় দিয়ে তৈরি। এটি বর্তমানে মন্দিরের ১৬১ ফুট উঁচু চূড়ায় স্থাপন করা হয়েছে। পতাকায় সূর্য (রামের সূর্য বংশের প্রতীক), পবিত্র ‘ওম’ এবং রামরাজ্যের প্রতীক কোভিডারা বৃক্ষের মতো চিহ্নগুলি রয়েছে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বরের সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর ২০২০ সালের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী মোদির ভূমি পূজনের মাধ্যমে রামমন্দির নির্মাণ শুরু হয়েছিল।