• SIR প্রক্রিয়া নিয়ে লাগাতার প্রশ্ন, খতিয়ে দেখতে ৩ আধিকারিককে রাজ্যে পাঠাচ্ছে কমিশন
    প্রতিদিন | ২৭ নভেম্বর ২০২৫
  • বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: রাজ্যের নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে আরও কড়া পদক্ষেপ জাতীয় নির্বাচন কমিশনের। গোটা প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখতে তিনজন বিশেষ অফিসারকে বাংলায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিল কমিশন। নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি বি সি পাত্র, সেক্রেটারি সৌমজিৎ ঘোষ এবং আন্ডার সেক্রেটারি বৈভব আগরওয়ালকে বাংলার সিইও অফিসে পাঠানো হচ্ছে। তাঁরা রাজ্যের সিইও মনোজ আগরওয়ালের তত্ত্বাবধানেই কাজ করবেন। অন্যদিকে, বুধবার ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ করতে দিল্লির কমিশন দপ্তরে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতৃত্ব। বিজেপি নেতাদের অভিযোগ, ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে রাজ্যজুড়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে তৃণমূল।

    বিশেষ নিবিড় ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া চলছে পশ্চিমবঙ্গে। আগামী ৪ ডিসেম্বর এনুমারেশন ফর্ম ফিল-আপ করে জমা দেওয়ার শেষ দিন। তার আগে রাজ্যের সিইও দপ্তরে তিন অফিসারকে পাঠাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। বাংলায় এসআইআরের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা সিইও অফিসেই নিযুক্ত থাকবেন। এই তিন অফিসার দিল্লির নির্বাচন সদনে কাজ করতেন। এসআইআরের কাজ সম্পূর্ণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা রাজ্যেই থাকবেন। রাজ্যের এসআইআরের কাজ নিয়ে প্রথম থেকেই নানা বিতর্ক।

    বর্তমানে বিএলও-দের একাংশ অতিরিক্ত কাজের চাপের অভিযোগ তুলে সিইও অফিস চত্বরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। অফিসের ভিতরেও কয়েকজন অবস্থান করেছিলেন। তবে মঙ্গলবার সন্ধের পর তাঁরা সেখান থেকে বেরিয়ে যান সিইও-র সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর। যদিও বিক্ষোভের ঘটনা নিয়ে আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কমিশন। সিইও অফিসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন কমিশন পুলিশের কাছ থেকে রিপোর্ট তলব করেছে। স্পষ্ট বলা হয়েছে, দুদিন অর্থাৎ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট জমা দিতে হবে। গত ২৪ নভেম্বরের ঘটনার রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই এই পদক্ষেপ নিয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।

    আবার এদিন, রাজ্যে চলা এসআইআর প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন ‘অনিয়মে’র অভিযোগ এনে বুধবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনে যায় বিজেপির চার সদস্যের প্রতিনিধি দল। বঙ্গ বিজেপি সভাপতি তথা রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য, বাংলায় দলের সহপর্যবেক্ষক অমিত মালব্যর সঙ্গে ছিলেন লোকসভার দুই সাংসদ জগন্নাথ সরকার, খগেন মুর্মু ও ওম পাঠক। বিজেপি প্রতিনিধিদলের দাবি, ২০০২ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত ৮৮ লাখ মৃত ভোটারের নাম রয়ে গিয়েছে রাজ্যের ভোটার তালিকায়। এছাড়াও প্রচুর পরিযায়ী, ঠিকানা বদল, ডুপ্লিকেট ও ভুয়ো ভোটারের নামও তালিকায় থাকার অভিযোগ করে বিজেপি নেতৃত্ব। বাংলাদেশের অনেক ভোটারের রাজ্যের তালিকায় নামের উল্লেখও করা হয়। বৈঠক শেষে শমীক ভট্টাচার্য জানান, “তৃণমূল কর্মীরা বিএলও-দের পার্টি অফিস বা পাড়ার ক্লাবে নিয়ে গিয়ে এনুমারেশন ফর্ম ফিল আপ করাচ্ছে। আমরা কমিশনকে এই বিষয়ে কড়া নজরদারি চালাতে বলেছি।” একইসঙ্গে জানান, “মতুয়া, রাজবংশীর মত যারা সিএএ-তে আবেদন করা সত্ত্বেও এখনও পর্যন্ত নাগরিকত্ব পাননি, তাদের মধ্যে অনেক বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের কাছে এই নিয়ে স্পষ্ট বার্তা জারি করার অনুরোধও করেছি আমরা।” অমিত মালব্য বলেন, “বিএলও-দের উপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্য সরকার নানা চাপ দিচ্ছে। আমরা কমিশনকে অনুরোধ করেছি, কোনভাবেই যেন একজন অবৈধ ভোটারও তালিকায় না থাকে ও কোনও বৈধ ভোটারের নাম যাতে বাদ না যায় তা নিশ্চিত করতে।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)