• বারাসত মর্গ কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মতো কাজ, নিয়োগপত্র পেলেন নিহতের মা
    প্রতিদিন | ২৭ নভেম্বর ২০২৫
  • অর্ণব দাস, বারাসত: যেমন কথা তেমন কাজ! মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর দুর্ঘটনায় মৃত বারাসতের যুবকের মায়ের হাতে বুধবার চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দিলেন রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার। বারাসতের কাজীপাড়া নেতাজিনগরের বাড়িতে গিয়েই প্রীতম ঘোষের মা কৃষ্ণাদেবীর হাতে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন বারাসত রেঞ্জের ডিআইজি ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, বারাসত জেলা পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝাড়খরিয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) অতীশ বিশ্বাস-সহ অন্যান্য পুলিশ কর্তারা। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জোনাল) অতীশ বিশ্বাস বলেন, “ভূমি রাজস্বদপ্তরে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হল। ক্ষতিপূরণ পাওয়ার বিষয়টির প্রক্রিয়া শুরু করেছি।”

    এদিকে মৃত যুবকের ‘চোখ চুরি’র অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বুধবার দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের পর দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে পরিবারের হাতে। বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এমএসভিপি ডাঃ অভিজিৎ সাহা বলেন, “মৃতের পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। সেই অভিযোগ বারাসত জেলার পুলিশের কাছে পাঠিয়েছি। যাতে মামলা রুজু হয় তা দেখতে বলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে স্বাস্থ্য দপ্তরের গাইডলাইন অনুযায়ী, তিন সদস্যের কমিটিও গঠন হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট জমা পড়বে স্বাস্থ্য ভবনে। পুলিশের কাছেও রিপোর্টের কপি পাঠানো হবে।” মৃতের মেসোমশাই কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী কথা রাখায় আমরা সন্তুষ্ট। এদিন রাতেই কলকাতার নিমতলা শ্মশানে মৃতদেহের সৎকার করা হবে।”

    উল্লেখ্য, সোমবার কাজীপাড়া রেলগেট সংলগ্ন যশোর রোডে ছোট মালবাহী গাড়ির ধাক্কা মারে বছর পঁয়ত্রিশের প্রীতম ঘোষকে। তাঁকে বারাসত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপরই ময়নাতদন্তের জন্য দেহ বারাসত মেডিক্যালের মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। ময়নাতদন্তের পর দেহের চোখ চুরির অভিযোগ তোলেন পরিবার। সদস্যদের দাবি, হাসপাতালের তরফে জানানো হয় ইঁদুর চোখ নিয়ে গিয়েছে। সেই কথা মানতে নারাজ আত্মীয়রা যশোর রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।

    সেই সময় বনগাঁ থেকে দলীয় কর্মসূচির পর যশোররোড ধরে ফিরছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিক্ষোভ দেখে কনভয় দাঁড় করান তিনি। মৃতের পরিবারের থেকে গোটা ঘটনা শোনার পর সঠিক তদন্ত, আর্থিক সাহায্য-সহ মৃতের মায়ের চাকরির কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হল মায়ের হাতে। তাছাড়াও তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

    যদিও, এদিনও মর্গের ফ্রিজিং সিস্টেম খারাপ থাকার অভিযোগ তুলে দেহ সংরক্ষণ করার জন্য বরফ কেনার টাকা দিয়েছেন বলে দাবি করেছে পরিবার। এদিনও মৃত যুবকের আত্মীয় দীপু হাজরা বলেন, “ইঁদুর যদি চোখ উপড়ে নেবে তাহলে শরীরের অন‍্যান‍্য অংশ কী ভাবে অক্ষত রয়েছে? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলুক সত্যিটা কী! যদি তাঁরা চোখ কাউকে দান করে থাকে সেটাও জানাক। কোথাও শুনেছেন ময়নাতদন্ত করতে নিয়ে গিয়ে লাশ কাটার ঘরে তুলসি পাতা দেওয়া হয়? আমরা বিচার চাই।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)