ধ্বংস করে দিচ্ছে জলজ বাস্তুতন্ত্র, এ বার সেই ভয়ঙ্কর চায়না দুয়ারি জাল নিষিদ্ধ করল রাজ্যের মৎস্য দফতর
আনন্দবাজার | ২৬ নভেম্বর ২০২৫
জলাভূমির বাস্তুতন্ত্র ধ্বংস করার অভিযোগ উঠছিল অনেক দিন থেকেই। পড়শি বাংলাদেশেও সেই দেশীয় প্রজাতি মাছ এবং অন্যান্য জলজ প্রাণীদের রক্ষা করতে চায়না দুয়ারি জাল ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল বছর চারেক আগেই। সম্প্রতি রাজ্য মৎস্য দফতর এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে।
রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী বিপ্লব রায়চৌধুরী তাঁর দফতরের এই পদক্ষেপের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেন, ‘‘এই চায়না দুয়ারি জাল এমনই একটি ফাঁদ যাতে মাছ-সহ যে কোনও প্রাণী এক বার ঢুকে গেলে, আর বেরিয়ে আসার কোনও উপায় থাকে না।’’ তিনি জানান, এই বিশেষ ধরনের ফাঁদে কচ্ছপ, সাপ, গোসাপের মতো বড় প্রাণী থেকে শুরু করে মৌরলার মতো ছোট মাছের চারা এমনকি, পানকৌড়ি, ডুবুরি (লিটল গ্রিব)-র মতো জলচর পাখিও মারা পড়ে নির্বিচারে। তাই শেষ পর্যন্ত চায়না জাল নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের বনপ্রাণপ্রেমী সংগঠন ‘হিউম্যান অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট অ্যালায়েন্স লিগ’ (হিল)-এর পক্ষ থেকে এটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার জন্য আবেদন করা হয়েছিল অনেক দিন আগেই। সংগঠনের সম্পাদক শুভ্রজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা প্রায় তিন বছর ধরে ধরে লক্ষ করছি যে এই জালের কারণে জলের উপর নির্ভরশীল নানা প্রাণী ও চারাপোনা সংকটের মুখে। বাজারে সস্তায় বিক্রি হয় এই জাল। চায়না দুয়ারি দিয়ে মাছ ধরাও খুব সহজ।’’
হিলের সদস্য সৌম্যদীপ মণ্ডল বলেন, ‘‘এর আগে আমাদের সংস্থার পক্ষ থেকে এই জাল থেকে অনেক কচ্ছপ ও সাপ উদ্ধার করে মুক্ত পরিবেশে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা বহু ধরনের সাপ ও পাখি এই জাল থেকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেছি। চোরাশিকারিরা কচ্ছপ শিকার করার জন্য এই ধরনের জাল ব্যবহার করেন। তাই আমরা মৎস্য দফতর ও বন দফতরের কাছে এই জাল নিষিদ্ধ করার জন্য আবেদন করেছিলাম। রাজ্য সরকারকে এই জাল নিষিদ্ধ করার জন্য ধন্যবাদ জানাই।’’ মৎস্য দফতরের একটি সূত্র জানাচ্ছে, শীঘ্রই বিভিন্ন জলাশয় থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জালগুলিকে বাজেয়াপ্ত করার কাজ শুরু হবে।