এসআইআরের মধ্যেই উত্তরপ্রদেশে শুরু ডিটেনশন সেন্টার তৈরির কাজ
বর্তমান | ২৭ নভেম্বর ২০২৫
সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি: পুলিশ লাইন, থানা, স্বাস্থ্য বিভাগের কমিউনিটি সেন্টার, পরিত্যক্ত সরকারি ভবন, গৃহহারাদের জন্য শীতকালীন আশ্রয়ভবন। এগুলিই হবে ডিটেনশন সেন্টার। উত্তরপ্রদেশের জেলা প্রশাসন সূত্রে এরকমই জানা যাচ্ছে। এসআইআর পর্ব সমাপ্ত হওয়ার আগেই ডিটেনশন সেন্টার তৈরির প্রাথমিক কাজ শুরু করে দিল উত্তরপ্রদেশ প্রশাসন। কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বেআইনি নাগরিক ও অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করা এবং জেলায় জেলায় ডিটেনশন সেন্টার নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার জেলাশাসকদের সঙ্গে এই নিয়ে বৈঠক করেন রাজ্যের মুখ্যসচিব। বুধবার থেকেই জমি চিহ্নিতকরণ শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে স্থির হয়েছে, সরকারি ফাঁকা জমিতে অস্থায়ীভাবে ডিটেনশন সেন্টার নির্মাণ হওয়ার আগে তৈরি কাঠামোগুলিকেই ডিটেনশন সেন্টারে পর্যবসিত করা হবে।
১৪ ফরেনার্স আইনে যে অনুপ্রবেশকারীদের গ্রেপ্তার করে সীমান্ত দিয়ে পুশ ব্যাকের ব্যবস্থা করার আগে ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হয়, সেই ধাঁচেই এই ডিটেনশন সেন্টার তৈরি হবে। সবথেকে বেশি ডিটেনশন সেন্টার তৈরি হবে দিল্লি সংলগ্ন উত্তরপ্রদেশের গৌতমবুদ্ধ নগর, গাজিয়াবাদ জেলায়। নয়ডা, গ্রেটার নয়ডা, ইন্দিরাপুরম, বৈশালী, নয়ডা এক্সটেনশন, রাজনগর, মোহননগর ইত্যাদি স্থানে আবাসনের কাজ সবথেকে বেশি মাত্রায় হয়ে থাকে। এইসব আবাসন নির্মাণে কাজ পাওয়ার তাগিদে অনুপ্রবেশকারীর সন্ধান বেশি পাওয়া যাবে বলে মনে করছে প্রশাসন। সেই চিহ্নিতকরণ শুরু হয়েছে। পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশে শুরু হয়েছে এসআইআর। সেক্ষেত্রেও ডিসেম্বর মাসের ৯ তারিখের পর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশের পর আভাস পাওয়া যাবে, কাদের নাম বাদ গেল। সেই তালিকার দিকেও কড়া নজর রাখবে প্রশাসন। ফেব্রুয়ারি মাসে যখন চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ হবে, তখন এই বাদ যাওয়াদের নাগরিকত্ব স্টেটাস কী হবে, সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানাবে। তবে তার আগেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। স্বাভাবিকভাবেই বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ যখন অসমের পর ডিটেনশন সেন্টার নির্মাণকার্য সরকারিভাবেই শুরু করেছে, তখন মনে করা হচ্ছে, দেশের অন্য রাজ্যগুলিতেও এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা সময়ের অপেক্ষা। জানা যাচ্ছে, যাদের নাম বাদ যাবে এবং এসআইআর ছাড়াও যাদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হবে, সেই তালিকা বিদেশি আঞ্চলিক নিবন্ধন বিভাগে (এফআরপিও) পাঠানো হবে। ওই দপ্তরই পুশ ব্যাকের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। স্বাভাবিকভাবেই এসআইআর পর্বের মধ্যেই আচমকা জেলায় জেলায় ডিটেনশন সেন্টার চালু করার প্রক্রিয়া জোরদার হওয়ায় আবার বাঙালি বিরোধী অভিযানের আশঙ্কাই উঠে আসছে প্রবাসীদের মধ্যে। উত্তরপ্রদেশের বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে সমাজের সব স্তরের বাঙালির বাস। বিশেষ করে দিল্লি ও সংলগ্ন ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিওনজুড়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। তাই পুনরায় বাংলা বললেই গ্রেফতার কর্মসূচি নেওয়া হবে কি না, সেই শঙ্কা জোরদার হচ্ছে।