• শিল্পের জমিতে মহাকাল মন্দির নিয়ে আপত্তি অশোকের, পাত্তা দিতে নারাজ এসজেডিএ
    বর্তমান | ২৭ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: ‘স্পিরিচুয়াল’ ট্যুরিজমের অঙ্গ তীর্থস্থান। তাই শিলিগুড়িতে গড়া হচ্ছে মহাকাল মন্দির। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হওয়ার পর পর্যটন শিল্পে আরও জোয়ার আসবে বলেই ওয়াকিবহল মহলের ধারণা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট মন্দির গড়া নিয়ে আপত্তি তুলেছেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা এসজেডিএ’র প্রাক্তন চেয়ারম্যন বর্ষীয়ান সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, শিল্পের জমিতে মন্দির গড়া নিয়ে আপত্তি রয়েছে।শিলিগুড়ি থেকে পাহাড়ে এবং সমতলের বিভিন্ন প্রান্তে সহজে যাওয়া সম্ভব। তাই উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশ দ্বার এই শহরে ‘স্পিরিচুয়াল’ ট্যুরিজমের প্রসারে চিন্তভাবনা করছে রাজ্য সরকার। এজন্য মাটিগাড়ার উত্তরায়ন এলাকার কাছে মহাকাল মন্দির ও কনভেনশন সেন্টার তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের জন্য প্রায় ১৭.৪ একর জমি প্রদান করবে এসজেডিএ। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার এজন্য একটি ট্রাস্টও গঠন করেছে। 

    ট্যুর অপারেটার রাজ বসু বলেন, বর্তমানে স্পিরিচুয়াল ট্যুরিজমের কদর সবচেয়ে বেশি। এখন বিভিন্ন ধর্মীয়স্থান ও তীর্থক্ষেত্রে বেশি ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকরা। তাই শিলিগুড়িতে মহাকাল মন্দির তৈরির যে সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রী নিয়েছেন, তা প্রশংসনীয়। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হওয়ার পর এখানে পর্যটন শিল্পে আরও জোয়ার আসবে। 

    এদিকে, সংশ্লিষ্ট প্রকল্প নিয়ে আপত্তি তুলেছেন অশোকবাবু। তিনি বলেন, শিল্পের জন্য চিহ্নিত জমিতে শিল্প স্থাপন হওয়া উচিত। সেখানে মন্দির গড়া নিয়ে অপাত্তি রয়েছে। এছাড়া শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ি সহ উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে অন্যতম সংস্থা এসজেডিএ। সেটিকে এড়িয়ে হিডকোকে জমি দেওয়া হয়েছে। এসজেডিএ’কে এড়িয়ে নিজেদের পছন্দের এজেন্সিকে দিয়ে কাজ করাচ্ছে রাজ্য সরকার। এতে এসজেডিএ’কে ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করা হচ্ছে। এসজেডিএর আয় মার খাচ্ছে। 

    অন্যদিকে, বর্ষীয়ান সিপিএম নেতার বক্তব্য মানতে নারাজ এসজেডিএ কর্তৃপক্ষ। তৃণমূল কংগ্রেস ও এসজেডিএ’র একাংশ বলেন, ওই মন্দির তথা কনভেনশন সেন্টার হওয়ার পর এখানে পর্যটন শিল্পের ব্যাপক উন্নয়ন হবে। পর্যটকের ভিড় আরও বাড়বে। যেমন জগন্নাথ মন্দির গড়ার পর মেদিনীপুরে পর্যটকের ভিড় বাড়ছে। কা঩জেই এ ধরনের প্রকল্প হাতে নেওয়া তো দূরের কথা, তা কল্পনাই করতে পারেননি অশোকবাবুরা। ছাব্বিশের ভোটের আগে তিনি অযথা গলা ফাটাচ্ছেন। এ বিষয়ে এসজেডিএ চেয়ারম্যান দিলীপ দুগার অবশ্য কিছু বলতে চাননি। 

    প্রসঙ্গত, দেড় মাস আগে দার্জিলিং পাহাড়ে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই সময় তিনি দার্জিলিংয়ের মহকাল মন্দির পরিদর্শন করে। তখনই শিলিগুড়িতে মহকাল মন্দিরের আদলে মন্দির গড়ার কথা ঘোষণা করেন। এর কিছুদিন পর শিলিগুড়িতে এসে তিনি ট্রাস্ট গঠন করেন। মন্ত্রিসভায় বিষয়টি পাশ হয়েছে। স্থানীয়দের একাংশ বলেন, এখানে ইসকন, জগদ্বন্ধু আশ্রম, গৌড়ীয় মঠ, আনন্দময়ী কালীবাড়ি, সেভক কালীবাড়ি সহ বেশকিছু মন্দির ও তীর্থস্থান রয়েছে। এই অবস্থায় মহাকাল মন্দির তৈরির সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
  • Link to this news (বর্তমান)