সংবাদদাতা, ধূপগুড়ি: পরকীয়ার জেরেই কি খুন! এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগ সামনে আসায় ধূপগুড়ির গৃহবধূ খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হল স্বামী। পাশাপাশি স্বামী বাবুল হোসেনের এক নিকট আত্মীয়ের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে ধূপগুড়ির মাগুরমারি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব আলতা গ্রামের ভাঙারে ধান খেতে গ্রামেরই এক বধূর মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। মৃতদের পাশেই ছিল দুইজোড়া জুতো। ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। মুহূর্তের মধ্যে ঘটনাস্থলে ভিড় জমান এলাকাবাসী। খবর পেয়ে ধূপগুড়ি থানার পুলিশ পৌঁছে ধান খেত থেকে ফরিদা বেগমের (৩৫) রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকেই মৃতার স্বামী নিখোঁজ ছিল। খোঁজখবর চালিয়ে রাতেই ফরিদার স্বামী বাবুল হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বুধবার দুপুরে মৃতার দাদা হামিদুল ইসলাম ধূপগুড়ি থানায় জামাই বাবুল হোসেন ও জামাইয়ের এক নিকট আত্মীয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগপত্রে হামিদুল জানান, বাবুল হোসেনের সঙ্গে তারই ওই নিকট আত্মীয়ের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে চলছিল। সেই বিষয় নিয়ে প্রায়ই বোনের সঙ্গে বোন জামাইয়ের অশান্তি হতো। বোন ফরিদা আমাদের আগেই বিষয়টি জানিয়ে রেখেছিল। কিন্তু বোনকে এভাবে খুন হতে হবে ভাবতেও পারছি না।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মঙ্গলবার রাতে ধান খেতে স্বামীর পরকীয়া সম্পর্ক নিয়ে ফরিদা বেগম প্রশ্ন তুললে দু’জনের মধ্যে তীব্র বচসা শুরু হয়। সেই সময় আচমকাই পিছন থেকে কোদাল দিয়ে বাবুল তার স্ত্রীর মাথায় আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই লুটিয়ে পড়েন ফরিদা। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় তাঁর।
ধূপগুড়ি থানার পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার বধূর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য জলপাইগুড়ি জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হবে। এদিনই দেহ পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে, এই ঘটনায় একদিকে যেমন গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে মৃতার পরিবারে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ঘটনার পিছনে আরও কেউ জড়িত কি না, সেদিকেও নজর রাখা হচ্ছে বলে জানান ধূপগুড়ির মহকুমা পুলিশ আধিকারিক গ্যালপসন লেপচা।