• রাজ্যের নির্দেশে ঝাড়গ্রামের ১১৪টি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ সম্পন্ন
    বর্তমান | ২৭ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্রাম: ঝাড়গ্রামের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে পর্যাপ্ত শিক্ষকের অভাবে ব্যাহত হচ্ছিল পঠন-পাঠন। ছাত্র ও শিক্ষকের ভারসাম্যহীনতা বড় সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। শেষমেশ রাজ্য সরকারের নির্দেশে জেলার ১১৪ টি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তরফে সাঁওতালি ও বাংলা মাধ্যমে শিক্ষক  নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক অজয় মাহাত বলেন, জেলার বেশিরভাগ প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক ছাত্র অনুপাতে পুনর্বিন্যাসের কাজ হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি সাঁওতালি মাধ্যমের ৮২ স্কুলে ১৬৪ জন ও বাংলা মাধ্যমে ১৩ জন শিক্ষক দ্রুত নিয়োগ করা হবে। 

        ঝাড়গ্রাম জেলায় ১ হাজার ২৯২টি প্রাথমিক স্কুল। স্কুলগুলিতে কোথাও ছাত্রের অনুপাতে শিক্ষক কম তো কোথাও বেশি থাকার জেরে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হয়েছিল। সরকারি নিয়ম মতে স্কুলে ৬০ জন ছাত্রছাত্রী থাকলে দু’জন শিক্ষক থাকতেই হবে। স্কুল শিক্ষা দপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী জেলার ১২০ টি স্কুলে এতদিন শিক্ষকের ঘাটতি ছিল। জেলার ১১৪ স্কুলে শিক্ষক পুনর্বিন্যাসের কাজ শেষ হয়েছে। আইনি জটিলতায় ৬টি স্কুলের পুনর্বিন্যাসের কাজ করা যায়নি।  সাঁওতাল মাধ্যম স্কুলে  আবার পর্যাপ্ত শিক্ষক না থাকায় পঠন-পাঠন প্রায় বন্ধ হয়ে যাবার মুখে পড়েছিল।  শিক্ষা দপ্তরের তরফে গত ৭ নভেম্বর একটি নির্দেশিকা জারি হয়। বিভিন্ন জেলার যেসব স্কুলে অতিরিক্ত শিক্ষক রয়েছেন সেখান থেকে তাঁদের ঘাটতি থাকা স্কুলে স্থানান্তর করার নির্দেশ দেওয়া হয়। জেলায় সেই নির্দেশ মেনে পুজোর পর পুনর্বিন্যাসের কাজ শুরু হয়। এই উদ্যোগের ফলে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষক ও ছাত্র,ছাত্রীর অনুপাতে সমতা আসে। 

    জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান জয়দীপ হোতা এদিন বলেন, বাংলার শিক্ষা পোর্টাল অনুযায়ী ঝাড়গ্রাম জেলায় ১২০টি স্কুল একজন শিক্ষক ছিলেন। বাস্তবে অবশ্য একজন স্থায়ী ও একজন প্যারাটিচার ছিলেন। নিয়মমতে শিক্ষক পরিসংখ্যানে এই প্যারা টিচারদের ধরা হয় না।  অনেক স্কুলে একজন স্থায়ী ও দু’জন প্যারাটিচার ছিলেন। নিয়মের কারণে সেখানে একজন শিক্ষক দেখানো হচ্ছিল। আবার অনেক স্কুলে একজন স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন সেখানে স্থানীয় অন্য স্কুল থেকে শিক্ষক আনা হয়েছিল। যেহেতু প্রোফাইল স্থানান্তর হয়নি তাই পোর্টালে একজন শিক্ষক আছে এমন দেখা যাচ্ছে। জেলার প্রাথমিক স্কুলে একজন মাত্র শিক্ষক রয়েছেন এমন কিন্তু নয়। জয়দীপবাবু আরও বলেন, আইনি জটিলতার কারণে ৬টি স্কুলে পুনর্বিন্যাস এখনও করা যায়নি। প্রান্তিক এলাকার স্কুলগুলিতে এখনও ছাত্র ও শিক্ষকের অনুপাতের সমস্যা রয়েছে। সেগুলি সমাধানের চেষ্টা চলছে। 

    জামবনী ব্লকের রানিপাল প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক বরুণ কুমার বেরা বলেন, এই স্কুলে ৩৪ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। বেশিরভাগ পড়ুয়া আদিবাসী সম্প্রদায়ের। বাংলা মাধ্যমে পঠন-পাঠন করতে অসুবিধায় পড়ে। সাঁওতালি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কোনও শিক্ষক নিয়োগ হলে পড়ুয়াদের উপকার হবে। জেলা শিক্ষা দপ্তরকে  বিষয়টি বারবার জানানো হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)