কাঁকসায় অজয় নদকে কেন্দ্র করে বালি ‘পাচার’, অভিযানে প্রশাসন
বর্তমান | ২৭ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, মানকর: অবৈধ বালি পাচার রুখতে অভিযানে প্রশাসন। বুধবার কাঁকসার শিবতলা ঘাটে এই ঘটনা ঘটে। এলাকার ইটভাটাগুলিতে গিয়েও আধিকারিকরা কথা বলেন। এদিন কাঁকসার ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিক মঞ্জু কাঞ্জিলাল সহ দপ্তরের অন্য আধিকারিকরা ও কাঁকসা থানার পুলিশ এই অভিযানে নামেন।
কাঁকসার পাশ দিয়ে বইছে অজয় নদ। অভিযোগ, এই নদকে কেন্দ্র করে বালির অবৈধ কারবার চলে। সম্প্রতি অবৈধ বালি পাচার নিয়ে একাধিক অভিযোগ সংশ্লিষ্ট দফতরে জমা পড়ে। এরপরেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। বিভিন্ন জায়গায় অভিযান হয়। এদিনও সেই ধারা বজায় রেখে অভিযান চালানো হয়।
ফাইন করা হল কয়েকটি বালি ভর্তি গাড়িকেও। স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, অজয় থেকে বালি তুলে বনকাটি, অযোধ্যা, এগারো মাইল হয়ে বেমালুম বালি পাচার হয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হচ্ছে ট্রাক্টরে করে বালির পাচার। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ পরিবেশ। পাশাপাশি সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, শাসক দলের ‘দাদা’দের হাত রয়েছে এই বালি কারবারিদের মাথায়। তাই এই কারবারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। প্রশাসনের বিধিনিষেধকে তোয়াক্কা না করেই চলছে কারবার। অভিযোগ, সমস্যায় পড়লে ‘দাদা’রা ঠিক ‘ম্যানেজ’ করে দেয়। তবে এদিন পরিদর্শন চলাকালীন একটি ট্রাক্টর, একটি লরি সহ চারটি গাড়িকে অবৈধ বালি পাচারের জন্য ফাইন করা হয়েছে। প্রায় লক্ষাধিক টাকার ফাইন হয়। এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, বছরের বিভিন্ন তিথিতে অজয়ের ঘাটগুলিতে বহু সাধারণ মানুষ স্নান করতে নামেন। কিন্তু অবৈধ ভাবে বালি তোলায় নদে বালিখাদ তৈরি হয়। জলপূর্ণ সেই নদে গভীরতা ঠাহর করা যায় না। ফলে প্রতি বছর প্রাণহানির ঘটনা ঘটে যাচ্ছে।
এদিন ইটভাটাগুলিতে যান আধিকারিকরা। সেখানে তাঁদের জানানো হয়, পুরনো অর্থবর্ষের সব বকেয়া আগে মেটাতে হবে। তারপর নতুন অর্থবর্ষের কাজ হবে। এদিন পুলিশ ও আধিকারিকদের দেখে ইটভাটার কর্মীদের একাংশকে লুকিয়ে পড়তে দেখা যায়। তবে পরে তাঁরা আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে। দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েকদিন আগেই বসুধা ঘাট সহ সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছিল কাঁকসার দিকে বালি তোলা হচ্ছিল না। বীরভূমের দিকে হচ্ছিল। এদিন মঞ্জুদেবী বলেন, শিবতলা ঘাট সহ সংলগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি। ইটভাটাগুলির মালিকদের সঙ্গে কথাও বলেছি। নিয়মিত অভিযান চলবে।
পূর্ব বর্ধমানের বিজেপির সহ সভাপতি রমন শর্মা বলেন, কাঁকসায় দিনেদুপুরে বালি পাচার হচ্ছে। আমরা একাধিকবার অভিযোগ জানিয়েছি। সরকার রাজস্ব পাচ্ছে না। অথচ স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের রমরমা হচ্ছে। যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নবকুমার সামন্ত বলেন, অবৈধ বালি কারবারের খবর পেলে প্রশাসনকে জানাই। প্রশাসন ব্যবস্থাও নিচ্ছে। দলকে কালিমালিপ্ত করতেই এসব ভুয়ো অভিযোগ করা হচ্ছে।-নিজস্ব চিত্র