ঘাটালে দেবের প্রস্তাব ‘অগ্রাহ্য’ করে অন্যত্র ব্রিজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত, বিক্ষোভে বাসিন্দারা
বর্তমান | ২৭ নভেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, ঘাটাল: ঘাটালে সাংসদ দীপক অধিকারীর(দেব) প্রস্তাবকে ‘অগ্রাহ্য’ করে ব্রিজের স্থান পরিবর্তন করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে দাসপুর ও ঘাটাল থানার বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দারা আন্দোলেন শামিল হলেন। বুধবার তাঁরা দাসপুর থানার নিমতলাতে সাংসদ-নির্দিষ্ট জায়গায় ব্রিজ তৈরির দাবি নিয়ে দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ দেখান। বিক্ষোভকারীদের দাবি, শিলাবতী নদী উপর দেব যেখানে ব্রিজ তৈরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন, আমরা সেখানেই চাই। কিন্তু মাস্টারপ্ল্যানে সেখান থেকে অনেকটা দূরে ব্রিজ তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার প্রতিবাদে এদিন আমরা বিক্ষোভ করি। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে বিক্ষোভ ওঠে। এদিনে দেবের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। সাংসদ প্রতিনিধি রামপদ মান্না বলেন, আমি এনিয়ে দাদার(দেব) সঙ্গে কথা বলেছি। তিনিও চাইছেন, বেশির ভাগ মানুষ যেখানে ব্রিজটি তৈরির দাবি তুলেছেন, সেখানেই ব্রিজটি করা হোক। এদিকে সেচ ও জলপথ দপ্তরের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের অধীন অনেক ব্রিজ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। প্রত্যেকটি ব্রিজই স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের প্রস্তাব মতো রাজ্যস্তর থেকে অনুমোদিত হয়েছে। নিমতলায় নয়, সংলগ্ন গাদিঘাটে ব্রিজ তৈরির জন্য রিভার রিসার্চ ইনস্টিটিউশন মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু করেছে।
ঘাটাল ব্লকের শিলারাজনগর, শীতলপুর, হরিদাসপুর সহ অজবনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা শিলাবতী নদী পার হয়ে দাসপুর-১ ব্লকের গাদিঘাটে আসেন, যেখান থেকে তাঁরা অতি সহজেই ঘাটাল-মেচোগ্রাম রাস্তা, দাসপুর গঞ্জ এবং ঘাটাল শহরে পৌঁছতে পারেন। শুধু তাই নয়, ওই এলাকার বহু পড়ুয়াও নদী পেরিয়ে দাসপুর-১ ব্লকের রসিকগঞ্জ হাইস্কুলে যাতায়াত করে। বর্ষার সময় ভরা নদীতে তাঁদের নৌকায় করে যাতায়াত করতে হয়, আর বর্ষা কাটলে গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে লক্ষাধিক টাকা ব্যয় করে শিলাবতী নদীর উপর একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন, সেই সাঁকো দিয়েই তাঁদের যাতায়াত চলে। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য লোকসভা নির্বাচনের আগে ঘাটালের সাংসদ দেব যখন শিলারাজনগর গ্রামে প্রচারে গিয়েছিলেন, তখন গ্রামের ছাত্রছাত্রীরা হাতে পোস্টার নিয়ে তাঁর কাছে শিলাবতী নদীর উপর একটি স্থায়ী সেতু তৈরির দাবি জানায়। শিলাবতীর পূর্ব পাড়ে রসিকগঞ্জের উত্তর দিকের গ্রামের নাম নিমতলা আর দক্ষিণ দিকের গ্রামের নাম গাদিঘাট। জগন্নাথ দত্ত, গোপাল বেরা, স্বপন দলুই, সুন্দর চক্রবতীর সহ আন্দোলনকারীদের বক্তব্য হল, ঘাটাল ব্লকের শিলারাজনগরের দক্ষিণ দিক থেকে দাসপুর-১ ব্লকের রসিকগঞ্জ বা গাদিঘাট সংযোগকারী ফুটব্রিজটি হলে কেবলমাত্র শিলারাজনগর এবং রাধাকান্তপুর গ্রামের মানুষ সুবিধে পাবেন। কিন্তু যদি শিলারাজনরের উত্তর দিক থেকে নিমতলা সংযোগকারী ওই ফুটব্রিজটি করা হয়, তাহলে বৃহত্তর স্বার্থে উভয় দিকের বহু গ্রামের সুবিধা হবে। এই কারণেই স্থানীয়দের অনেকেই চাইছেন যে নিমতলা এবং উত্তর শিলারাজনগরের মধ্যে ব্রিজটি তৈরি হোক। কারণ, ঘাটাল ব্লক থেকে নদী পেরিয়ে নিমতলায় এলেই হাতের কাছে বাজার, পোস্ট অফিস, দমকল অফিস এবং ঘাটাল-মেচোগ্রাম রাস্তা পাওয়া যাবে। এছাড়া, নিমতলায় ব্রিজ তৈরি হলে রসিকগঞ্জ স্কুলের পড়ুয়াদের যাতায়াতেরও কোনও সমস্যা থাকবে না। তৃণমূলের দাসপুর-১ অঞ্চল সভাপতি সোমরাজ দত্ত বলেন, আমরাও চাই নিমতলাতেই ব্রিজটি তৈরি হোক।-নিজস্ব চিত্র