• শীত পড়তেই জমে উঠেছে বিষ্ণুপুরে পোড়ামাটির হাট, কেনাকাটায় ভিড়
    বর্তমান | ২৭ নভেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বিষ্ণুপুর: শীত পড়তেই বিষ্ণুপুরে পোড়ামাটির হাট জমে উঠেছে। প্রতি শনি ও রবিবার হওয়া হাটে স্থানীয়রা ছাড়াও বিদেশি পর্যটকরা ভিড় করছেন। ধামসা-মাদলের তালে আদিবাসী রমণীদের সঙ্গে নাচে পা মিলিয়ে ভিনদেশের নাগরিকরা অনাবিল আনন্দ উপভোগ করছেন। মহকুমা প্রশাসন পরিচালিত ঐতিহাসিক জোড় শ্রেণির মন্দির প্রাঙ্গণে বসা হাটে পোড়ামাটি, ডোকরা, শঙ্খ থেকে শুরু করে বিভিন্ন হস্তশিল্পের সম্ভার নিয়ে হাজির হচ্ছেন শিল্পীরা। সেই সঙ্গে মহকুমা প্রশাসনের তরফে আদিবাসী নৃত্যের আয়োজন করা হয়।

    বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, পোড়ামাটির হাটে টেরাকোটা, শঙ্খ, লণ্ঠন প্রভৃতি হস্তশিল্পীরা বসেন। সেই সঙ্গে কিছু খাবারের দোকান রয়েছে। বছরের অন্য সময় শুধু শনিবার বসলেও শীতের মরশুমে পর্যটকদের কথা ভেবে শনি ও রবি দু’দিন হাট বসানো হচ্ছে। তাতে শিল্পীরাও দু’দিন ধরে তাঁদের সামগ্রী বিক্রি করার সুযোগ পাচ্ছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে চালু হওয়া পোড়ামাটির হাট বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। সারাবছরই ওই হাটে ভিড় হয়। তবে শীতের মরশুমে তা আরও জমে ওঠে। বিষ্ণুপুরে এই সময়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা আসেন। তাঁদের কাছে পোড়ামাটির হাট বাড়তি পাওনা। বেড়াতে এসে এক ছাতার তলায় পছন্দের বিভিন্ন হস্তশিল্প সামগ্রী কিনতে পারেন। একইভাবে বিষ্ণুপুরে আগত বিদেশি পর্যটকরাও আদিবাসী নৃত্য দেখেন। কেউ কেউ শিল্পীদের সঙ্গে পায়ে পা মেলান। অনাবিল আনন্দ উপভোগ করেন। 

    রবিবার হাটে গিয়ে দেখা গেল, ফ্রান্সের একদল পর্যটক পোড়ামাটির হাটে হাজির হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দু’জন হাটের ছবি তুলতে ব্যস্ত। পরে তাঁদেরই দেখা গেল হ্যামক দোলনায় দুলতে। আবার ইতালির দুই মহিলা পর্যটককে ধামসা মাদলের তালে আদিবাসী রমণীদের নাচে পায়ে পা মেলাতে দেখা গেল। তাঁরা অনাবিল আনন্দ উপভোগ করেন। তাঁরা ইংরেজিতে বললেন, দারুণ আনন্দ উপভোগ করছেন। বিষ্ণুপুরে ঐতিহাসিক মন্দির দেখার পাশাপাশি এত মানুষের সঙ্গে খোলামেলা মিশতে পারছেন। এদেশের সংস্কৃতিকে এত কাছ থেকে দেখার সুযোগ পেয়ে তাঁরা ভীষণ আপ্লুত। শুধু মনোরঞ্জনই নয়, পোড়ামাটির হাটে স্থানীয়রা হস্তশিল্পের সামগ্রী নিয়ে বসছেন। কেউ মাটির তৈরি হরেক রকমের গয়না, কেউ পোড়ামাটির ঘর সাজানোর জিনিস, কেউ বাঁশের কাজ, কেউ বা বিভিন্ন খাবারের দোকান বসাচ্ছেন, তা থেকে তাঁদের ভালো আয় হচ্ছে। বিষ্ণুপুরের নাগরিকদের একাংশের বক্তব্য, বাইরের মানুষজন ছাড়াও শহর ও আশেপাশের বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দারাও পোড়ামাটির হাটে এসে দারুণ আনন্দ উপভোগ করছেন। আট থেকে আশি সব বয়সের মানুষের কাছে পোড়ামাটির হাট ভীষণ পছন্দের জায়গা হয়ে উঠেছে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)