• বউমার উপর আক্রোশ থেকেই নাতিকে খুন, স্বীকার ঠাকুরমার
    বর্তমান | ২৭ নভেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: পুলিশি জেরায় শেষপর্যন্ত নাতিকে খুন করার কথা স্বীকার করে নিলেন ঠাকুরমা। বউমার উপর আক্রোশের জেরেই আড়াই মাসের নাতিকে পুকুরে ছুড়ে ফেলেছিলেন তিনি।   

    ডোমজুড়ে আড়াই মাসের শিশু খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত ঠাকুরমা সারথী বন্দ্যোপাধ্যায়কে বুধবার হাওড়া আদালতে তোলে পুলিশ। বিচারক ধৃতকে পাঁচদিনের পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দেন। মঙ্গলবার ভোরে ডোমজুড়ের সলপের পীরডাঙা এলাকায় সদ্যোজাত নাতিকে পুকুরে ছুড়ে খুন করার অভিযোগ উঠেছিল ঠাকুরমা সারথী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। তাকে আটক করে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঠান্ডা মাথায় ছিলেন বৃদ্ধা। কিছুতেই খুনের প্রকৃত কারণ স্বীকার করছিলেন না তিনি। শেষে শিশুটির মা অর্থাৎ ছোটো বউমার উপর ক্ষোভ ঝরে পড়ে তার গলায়। পুলিশ জানিয়েছে, আরামবাগের বাড়িতে বড়ো ছেলে ও বউমাকে নিয়ে সমস্যা না থাকলেও টাকা পয়সা নিয়ে ছোটো ছেলে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অশান্তি লেগেই থাকত সারথীদেবীর। অভিজিৎ বিয়ে করার পর অশান্তি আরও বাড়ে। বিভিন্নভাবে শাশুড়ির মন জোগানোর চেষ্টা করলেও অভিজিতের স্ত্রী ময়নাকে কোনওভাবেই পছন্দ করত না সারথীদেবী। কাজে খোঁটা দেওয়া, যেচে অশান্তি করার মতো ঘটনা লেগে থাকত। পারিবারিক অশান্তি থেকে দূরে থাকতে বছর পাঁচেক আগেই স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা হয়ে যান অভিজিৎ। দু’বছর আগে তাঁদের সাতমাস বয়সি প্রথম সন্তানের রহস্য মৃত্যু হয়। সম্প্রতি সদ্যোজাত সন্তানের দেখভালের জন্য মাকে নিয়ে আসতেই ফের শুরু হয় অশান্তি।

    পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ঠাকুরমা জানিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে তাকে নাকি জোর করে ঘুম থেকে তুলে নাতির দায়িত্ব দিয়ে প্রাতঃকৃত্য সারতে বাইরে গিয়েছিলেন বউমা। তাতেই মেজাজ বিগড়ে যায় তাঁর। রাগের বশে শিশুটিকে তুলে নিয়ে সোজা পুকুরে ফেলে দেন তিনি। এদিন আদালতে তোলার আগে অভিযুক্ত সারথীদেবী ঠান্ডা মাথায় বলে, ‘জানি না বাবা কীভাবে যেন হয়ে গেল। মাথা ঠিক ছিল না। ’ হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘অভিযুক্তের মধ্যে মানসিক সমস্যার কোনও লক্ষণ নেই। স্রেফ রাগের বশে ভীষণ ঠান্ডা মাথায় নাতিকে খুন করেছেন তিনি। এতটা নিষ্ঠুরতা সচরাচর দেখা যায় না।’
  • Link to this news (বর্তমান)